চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করতে সরকারকে ২৮ দিনের আল্টিমেটাম
সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসমী ৩৫ বছর করতে সরকারকে ২৮ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। আজ সোমবার (২০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সুলতানা আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। পরে সাধারণ সম্পাদক এম এ আালী বলেন, ‘আমরা সরকারকে ২৮ দিন সময় দিচ্ছি। এরমধ্যে দাবির বিষয়ে সরকার কোনও ঘোষণা না দিলে দেশের ৬৪ জেলার নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে। প্রয়োজনে মরবো, তবুও রাজপথ ছাড়বো না। সারাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগে জড়ো হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করার সময় অসংখ্যবার দাবি মানার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবির বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলবেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কি করেছেন তা জানি না।’ এসময় আজই প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘বেকার সমাজ ধাপে ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিন বছর ক্ষতির শিকার হয়েছে। পরে আরও একাধিকবার ক্ষতির মুখে পড়েছে। কিন্তু কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। এখন করোনার কারণেও তারা ক্ষতির মুখে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যদি আবার বেকার সমাজ বঞ্চিত হয়, তাহলে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। ঈদের পর শাহবাগে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’ এবার দাবি আদায় না করে ঘরে ফেরা হবে না বলেও জানিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, টানা কয়েক বছর ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। তবে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে নাকচ হয়েছে ৩৫-এর সব চাওয়া-পাওয়া। তারপরও আন্দোলন থেকে সরে আসেননি আন্দোলনকারীরা। সাংগঠনিকভাবে কিছুটা গুছিয়ে উঠে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
এ প্রক্রিয়ায় রয়েছেন আন্দোলনকারীদের সংগঠক এম এ আলী, ফেরদৌস জিন্নাহ লেলিন, সঞ্জয় দাসসহ আরও অনেকে। জানা গেছে, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন সফলতার মুখ দেখলেও এখনো চলছে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলন। ২০১৯ সালে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে গ্রেফতারের ঘটনাও।
এরইমধ্যে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় আন্দোলন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। গত বছরের ২৫ এপ্রিল চাকরি প্রত্যাশীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে ওঠে।
তবে তা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পড়াশোনা শেষ করার পর একজন ছাত্র অন্তত সাত বছর সময় পেয়েছে। এটা অনেক সময়। তাছাড়া এর আগে চাকরির বয়স ২৫ বছর ছিল, সেখান থেকে ২৭ ও পরবর্তীতে ৩০ বছর করা হয়। সে হিসেবে এখন বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই।
যদিও করোনার কারণে সুর কিছুটা নরম করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনার মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করেবন তিনি।