ঈদের পর আন্দোলনে নামছে ৩৫ প্রত্যাশীরা
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ফের আন্দোলনে নামছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। দাবি আদায়ে সরকারকে নতুনভাবে আল্টিমেটামও দিয়েছে সংগঠনটি। দাবি না মানলে ঈদুল আজহার পর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তারা।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে আগামী সোমবার (২০ জুলাই) ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েসন (ক্রাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ (কেন্দ্রীয় কমিটি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, সেশনজট, রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিয়োগের ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ ও বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনেকের চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়ে গেছে। সবকিছু বিবেচনায় সরকারের উচিত চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা।
ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, আমরা দাবি আদায়ে সরকারকে ২৮ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি। এর মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে ঈদুল আজহার পর দেশের আপামর ছাত্র সমাজকে সাথে নিয়ে আমরা শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। আমাদের কর্মপরিকল্পনা জানাতে আগামী ২০ জুলাই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বেসরকারি চাকরিতেও ৩০ বছরের পর প্রবেশ করা যাচ্ছে না। আমাদের দাবি সেখানেও যেন বয়সসীমা উঠিয়ে দেয়া হয়। ৩০ এর বাধ্যবাধকতা থাকায় আমরা অনেক মেধাবীদের হারাচ্ছি। তারা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে মেধার পাচার হচ্ছে। সরকারের অবশ্যই এদিকে নজর দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, টানা কয়েক বছর ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। তবে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে নাকচ হয়েছে ৩৫-এর সব চাওয়া-পাওয়া। তারপরও আন্দোলন থেকে সরে আসেননি আন্দোলনকারীরা। সাংগঠনিকভাবে কিছুটা গুছিয়ে উঠে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। এ প্রক্রিয়ায় রয়েছেন আন্দোলনকারীদের সংগঠক এম এ আলী, ফেরদৌস জিন্নাহ লেলিন, সঞ্জয় দাসসহ আরও অনেকে।
জানা গেছে, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন সফলতার মুখ দেখলেও এখনো চলছে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলন। ২০১৯ সালে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে গ্রেফতারের ঘটনাও। এরইমধ্যে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় আন্দোলন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিলো।
গত বছরের ২৫ এপ্রিল চাকরি প্রত্যাশীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে ওঠে। তবে তা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পড়াশোনা শেষ করার পর একজন ছাত্র অন্তত সাত বছর সময় পেয়েছে। এটা অনেক সময়। তাছাড়া এর আগে চাকরির বয়স ২৫ বছর ছিল, সেখান থেকে ২৭ ও পরবর্তীতে ৩০ বছর করা হয়। সে হিসেবে এখন বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই।
এ সময় তিনি প্রস্তাব উত্থাপনকারী সংসদ সদস্যকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহবান জানান এবং প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। কিন্তু বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু সেটি প্রত্যাহারে রাজি না হলে কণ্ঠভোটের আয়োজন করা হয়। কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেন সংসদ সদস্যরা। মূলত প্রস্তাবটি পাস না হওয়াতেই তীব্র হতাশ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।