বিজয় দিবসে গনঅনশন থেকে ৩৫ আন্দোলনকারীদের খোলা চিঠি
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ ৪ দফা দাবিতে ১১তম দিনের গণঅনশন কর্মসূচী পালন করছে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনকারীরা। আজ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নিয়মিত কর্মসূচীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি দিয়েছে আন্দোলনের নেতারা। চিঠিতে তারা তাদের চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করাসহ ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহবান জানিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আসসালামু আলাইকুম
আমরা আপনার ২৮ লাখ শিক্ষিত সন্তান। আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ সৈনিক। বঙ্গবন্ধু সুযোগ্য কন্যা হিসাবে আপনি বিশ্বে আজ প্রশংসিত। প্রায় ২৮ লক্ষ শিক্ষিত যুব সমাজ আজ আপনার দিকে চেয়ে আছে। আপনি লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু ২৮ লক্ষ শিক্ষিত সমাজের কথা বিবেচনা না করলে সেটা হবে এক অমানবিক। আপনার সন্তানরা আপনার কাছে কেবল চাকরিতে আবেদনের সুযোগ চেয়েছে। কারণ বাংলাদেশের জনগণের গড় আয়ু যখন ৫৭ ছিল তখন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ করা হয়েছিল। আজ বাংলাদেশের জনগণের গড় আয়ু প্রায় ৭৩। সেখানে ৪০ হওয়ার কথা, আমরা চেয়েছি মাত্র ৩৫।
বিশ্বের উন্নত উন্নয়নশীল ১৬২ দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ এবং অনেক দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমাই নেই। বাংলাদেশ ছাড়া ৫৭টি স্যাটেলাইট দেশের মধ্যে সবগুলোতেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ এবং এর ঊর্ধ্বে। আপনি হয়তবা জানেন যে গত ২০০৩-২০১৩ পর্যন্ত দেশে চরম সেশনজট ছিল। এতে করে আমাদের লাইফ থেকে ৪-৫ বছর ধ্বংস হয়ে গেছে । এখনও অনেক জায়গায় সেশনজট বিরাজমান।
আজ লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক আপনার দিকে চেয়ে আছে । মানবতার মা হিসাবে আপনি আমাদের এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন। আজ অমানবিক আবেদন ফি’র ৫০০, ১০০০, ১৫০০ ২০০০ টাকার কারণে অনেক মেধাবী আবেদন করতে পারে না। ডিজিটাল বাংলাদেশে পঞ্চগড়, টেকনাফ, তেতুলিয়া থেকে জ্যামের শহর ঢাকা শহরে এসে পরীক্ষা দেওয়া কতটা কষ্টকর তাহা আপনি খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে ৩-৪ বছর লাগে। যাহা শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারকে অচল করে দেয়। ডিজিটাল বাংলাদেশে এই ধরনের সমস্যাগুলো মেনে নেওয়া কষ্টকর। দাবিটি যদি অযৌক্তিক হত তবে আপনি কখনই নির্বাচনী ইশতিহারে রাখত না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, দাবি যদি ন্যায্য হয় আর সংখ্যা যদি একজনও হয় আমরা তা মেনে নিব। আজ প্রায় ২৮ লক্ষ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৩৫ সহ ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়া হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব মানবতার মা হিসাবে এবং প্রায় ২৮ লক্ষ আপনার শিক্ষিত সন্তানদের কথা বিবেচনা করে বিজয়ের মাসে আপনি এক স্মরণীয় বিজয় উপহার দিবেন । এতে করে ২৮ লক্ষ শিক্ষিত সন্তান, তাদের পরিবার এবং পরবর্তী প্রজন্ম আপনার নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
সোনার বাংলা গড়তে মেধাবীদের মূল্যায়ন করার বিকল্প কিছু নেই। তরুণ যুব সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে ৩৫ সহ ৪ দফা বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরী। আশাকরি আপনি ২৮ লক্ষ শিক্ষিত যুবকদের দিকে সুদৃষ্টি দিয়ে বিজয়ের মাসে এক অবিস্মরণীয় বিজয় আমাদের উপহার দিবে। আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি।
২৮ লক্ষে শিক্ষিত যুব সমাজের পক্ষে,
মুজাম্মেল মিয়াজী, প্রধান সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদ।