৩৫ নিয়ে আলোচনায় বসছে কর্তৃপক্ষ
১৬ ডিসেম্বরের পর চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ আন্দোলনকারীদের চারদফা দাবি নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। টানা ১০ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালনে মাঠে রয়েছে ‘৩৫ চাই’ আন্দোনলকারীরা। এই প্রেক্ষিতে বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ উচ্চপর্যায়ের নজরে এসেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী।
আজ রোববার দশম দিনের মতো দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কাফন সমাবেশ ও গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারীরা। জাতীয় প্রেসক্লাবে গত ৬ ডিসেম্বর এই গণঅনশন শুরু করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীরা।
মুজাম্মেল মিয়াজী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ের মহলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। আমাদের দাবি নিয়ে মন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে। এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন স্তরের সংশ্লিষ্টরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। এরপর তারা চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করা সহ ৪ দফা দাবি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করবে বলে মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
আগেও এমন আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সরকার। তাহলে এবারও কি তেমন কিছু হতে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি- আন্দোলনকারীদের দুঃখ, হতাশা সরকার দরদ দিয়ে বুঝতেছে। তাই এবার আমাদের দাবি পূরণ হবে বলে মনে করছি। আর যদি দাবি পূরণ না হয়, তাহলে ১৬ ডিসেম্বরের পর আমরণ অনশনে যাবে আন্দোলনকারীরা।
পড়ুন: ভিসি অফিসের পর্দা কিনতে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়
এর আগে গত শুক্রবার প্রেসক্লাবের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে নিজেদের হাতে সার্টিফিকেট নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় ৩৫ প্রত্যাশী সকলের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ লক্ষ করা করা গেছে। পাশাপাশি তাদের ‘আমরা সার্টিফিকেট চাই না, চাকরির বয়স ৩৫ করে দিন’ ‘আমাদের মেয়াদ শেষ, আমাদের সুযোগ দিন’ এসব বাক্য বলতে দেখা গেছে।
তাদের ৪ দফা দাবি হলো- চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করা; চাকরির আবেদন ফি কমিয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা; চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলো জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে নেওয়া ও চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
আন্দোলনকারী বলছে, বর্তমান সরকারের ইশতিহার অনুযায়ী তাঁরা ক্ষমতায় আসলে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করবে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন ‘৩৫’ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার বিষয়ে তোমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত না জানিয়ে ৪১তম বিসিএসের সার্কুলার দিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে দেশব্যাপী লক্ষাধিক ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
পড়ুন: চোখ পরীক্ষায় স্মার্টফোন: ডা. মোমিনের উদ্ভাবন
‘৩৫ চাই’ আন্দোলনের কর্মী রেশমা আক্তার বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ ৪ দফা দাবিগুলো সময়ের সেরা যৌক্তিক দাবি। এই দাবি মেনে নিতে কালক্ষেপণ করলে শুধু সরকারের জন্যই না জাতির জন্যও এটা বড় এক ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি।