এবার আমরণ গণঅনশনে বসছেন ৩৫ চাই আন্দোলনকারীরা
ফের আমরণ অনশনে বসছেন ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনকারীরা। আগামী ৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করবে তারা। চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করাসহ চার দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাত চায় আন্দোলনকারী। এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদ।
আজ শনিবার অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি। এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী ও সুরাইয়া ইয়াসমিনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা জানায়, ‘চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করাসহ ৪ দফা দাবি আদায়ের জন্য বিজয়ের মাসে এই গণঅনশন হবে জীবন মরণ লড়ায়ের এক আন্দোলন। দাবি না মানা পর্যন্ত এই গণঅনশন চলবে।’
তাদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করা; চাকরির আবেদন ফি কমিয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা; চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলো জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে নেওয়া ও চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এখন শুধু সরকারি চাকরি নয় বেসরকারিতেও আবেদনের সময়সীমা ৩০ বছর। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন মানবিক কারণে অনেকে এই সময়ে তাদের পড়াশোনা শেষ করতে পারে না। কিন্তু তাদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বয়স না থাকায় চাকরিতে আবেদন করতে পারছে না। এর ফলে দেশ তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একইসঙ্গে উচ্চশিক্ষিত একটি জনগোষ্ঠি বেকার থাকায় পরিবার ও সমাজর জন্য বোঝা হয়ে থাকছে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গত নির্বাচনের ইশতেহারে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার একটি আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু এখন এ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে তারা। এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে বলাই সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছরে উন্নীত করা সময়ের একটি যৌক্তিক দাবি। ডিজিটাল বাংলাদেশের এই বৃহৎ গোষ্ঠী শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের কথা বিবেচনা করে চার দফা দাবি মেনে নিতে বিলম্ব করা মোটেও উচিত নয়।
এর আগে ৪ দফা দাবিতে গত (১ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সঙ্গে করা সাক্ষাত করেছেন আন্দোলনকারীরা। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আন্দোলনরত নেত-কর্মীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, ওবায়দুল কাদের তাদের ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলো কিন্তু সেই আশ্বাস আর রক্ষা করা হয়নি।
ওবায়দুল কাদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাতে নিতে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে ইতিবাচক তথ্য জানাবেন তিনি। কিন্তু তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করার সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কি কথা হয়েছে তার সঠিক কোন কিছু জানাতে পারেননি। ফলে আন্দোলনরত নেতা-কর্মীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ফের গণ-অনশনের ডাক দেয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে চাকরিতে আবেদনের বয়য়সীমা বৃদ্ধি করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। তবে নির্বাচনের ১০ মাস পার হয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন- এস এ সজীব আহমেদ, সুনিয়া চৌধুরী, রেশমা আক্তার, উজ্জল সরকার এবং শাহ্ নাজিম উদ্দিন প্রমূখ।