চাকরি হলো না, ফল বিক্রি শুরু করলেন এমএ পাস আরিফ (ভিডিও)
দুই মাস হয়েছে এমএ পাস করেছেন। বিভিন্ন যায়গায় চাকরির পরীক্ষাও দিয়েছেন। কিন্তু চাকরির পরীক্ষা দেয়ার পেছনে যে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয় পরিবার থেকে তা দিতে না পারায় শুরু করলেন ফল বিক্রি। বলা হচ্ছে সুনামগঞ্জের আরিফ উদ্দিনের কথা।
আরিফ সিলেটের মদন মোহন কলেজ (এমসি) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এমএ পাস করেছে। তিনি একই কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেন। পড়ালেখা শেষ করে বিভিন্ন জায়গায় চাকরির পরীক্ষা দেন আরিফ। সবশেষ দুই মাস আগে চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকায় আসেন তিনি। কিন্তু চাকরি না হওয়ায় ফল বিক্রি শুরু করে আরিফ।
আরিফের বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নে। বাবা পেশায় একজন কৃষক। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে আরিফ চতুর্থ। ছোটবেলা থেকে প্রাইভেট পড়িয়ে পড়ালেখার খরচ চালিয়ে গেছেন। কিন্তু প্রাইভেটেরে টাকা দিয়ে চাকরির আবেদনের ফি আর যাতায়াতের খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছিল না বলেই চাকরির আবেদন বাদ দিয়ে এই পেশায় নামেন তিনি। ঢাকার ভাষানটেক এলাকায় ফল বিক্রি করেন আরিফ। দিনে তিনশ’ থেকে চারশ’ এটিই তার উপার্জন।
আরিফের ফল বিক্রির বিষয়টি বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ন আহবায়ক রাশেদ খাঁনের নজরে আসলে তিনি আরিফের ফল বিক্রি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করেন। যেটি পরে ভাইরাল হয়ে যায়।
এবিষয়ে জানতে আরিফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাবা-মা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছে একটি চাকরির আসায়। কিন্তু চাকরির পরীক্ষার আবেদন করতে যে পরিমাণ ফি নেয়া হয় তা দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই চাকরির আবেদন করা বাদ দিয়ে ফল বিক্রি শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, চাকরির বয়স প্রায় শেষের দিকে। এখন কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। সরকার চাকরির আবেদন ফিও কমাচ্ছে না আবার চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমাও বাড়াচ্ছে না। আমার এ কুল ওই কুল দুই কুলই যাচ্ছে। বাড়িতে যেতে পারিনা। বাড়িতে গেলে বা-মার চোখের দিকে তাকাতে পারিনা। কান্না জড়িত কণ্ঠে আরিফ বলেন, আপনাদের মাধ্যমে সরকার এবং সমাজের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে অনুরোধ করবো আমাকে আমার যোগ্যতা অনুযায়ী একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ন আহবায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষ সমাজের আসল চেহারাটা দেখানো। সরকার সব সময় বলে আমরা ঘরে ঘরে চাকরি দিচ্ছি। কিন্তু আসল অবস্থা আপনারা ভিডিওতেই দেখতে পেরেছেন। একদিকে চাকরির আবেদন ফি বাড়তি অন্যদিকে প্রতি সপ্তাহে চাকরির পরীক্ষা। সাধারণ মানুষ যাবে কই? সরকারের উচিৎ চাকরির আবেদন ফি কমানো।