২২৮০ জন নেবে টিএমএসএস, নিয়োগ পেতে যা করবেন

১৬ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর ৮ নম্বর পৃষ্ঠায় জনবল নিয়োগের এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনায় ছয় ধরনের পদে ২২৮০ জন কর্মী নেয়ার কথা জানিয়েছে টিএমএসএস। আবেদন পাঠানো যাবে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

টিএমএসএস প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, জোনাল ম্যানেজার (মাইক্রোফিন্যান্স) পদে নিয়োগ পাবে ১০ জন। সমপদে দুই বছর এবং অঞ্চলপ্রধান হিসেবে দুই বছরসহ মোট পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাসহ স্নাতকোত্তর বা এমবিএ। মোটরসাইকেল চালনায় দক্ষ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।

এরিয়া ম্যানেজার (মাইক্রোফিন্যান্স) নেওয়া হবে ২০ জন। সমপদে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ স্নাতকোত্তর বা এমবিএ এবং মোটরসাইকেল চালনায় দক্ষ। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার (মাইক্রোফিন্যান্স) পদে নেবে ৩০০ জন। লাগবে সমপদে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ স্নাতকোত্তর বা এমবিএ ডিগ্রি এবং মোটরসাইকেল চালনা জানা থাকতে হবে। শাখা হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর (মাইক্রোফিন্যান্স) ৩০০ জন নিয়োগ পাবে। বাণিজ্যে স্নাতক বা বিবিএ (ফিন্যান্স, অ্যাকাউন্টিং)। কম্পিউটার চালনাসহ টাইপিংয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা। সিনিয়র সুপারভাইজার (মাইক্রোফিন্যান্স) নেবে ৪০০ জন। যোগ্যতা স্নাতকোত্তর বা সমমান। সমপদে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে স্নাতক পাস প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। ১২৫০ জন ফিল্ড সুপারভাইজার (মাইক্রোফিন্যান্স) নিয়োগ পাবে। স্নাতক পাস হলেই করা যাবে এ পদে আবেদন। তবে অভিজ্ঞরা অগ্রাধিকার পাবেন। জোনাল ম্যানেজার (মাইক্রোফিন্যান্স) এবং এরিয়া ম্যানেজার (মাইক্রোফিন্যান্স) পদের প্রার্থীদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ এবং অন্য সব পদের প্রার্থীদের বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

আবেদনপদ্ধতি
আবেদন করতে হবে ‘পরিচালক (এইচআর-এম অ্যান্ড অ্যাডমিন), টিএমএসএস’ বরাবর। আবেদনের সঙ্গে তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত রঙিন ছবি, সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি, মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। নির্বাচনী পরীক্ষার ফি বাবদ সব পদের জন্য ২০০ টাকা এবং মানি রসিদ ১০ টাকা সংস্থার যেকোনো শাখা থেকে বা তফসিলভুক্ত যেকোনো ব্যাংক থেকে টিএমএসএস শিরোনামে পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটও আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। খামের ওপর পদের নাম উল্লেখ করতে হবে। ঢাকা বিভাগে কাজ করতে চাইলে আবেদনপত্র পাঠানো যাবে টিএমএসএস, প্রধান কার্যালয়, ৬৩১/৫ পশ্চিম কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, ঢাকা-১২১৬—এই ঠিকানায়।

চট্টগ্রামের আবেদনপত্র পাঠাতে হবে ‘চট্টগ্রাম ডিভিশনাল অফিস, ৫৪৯ পিটি রোড, আব্দুল আলীর হাট, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম’ ঠিকানায়। সিলেটে কাজ করতে চাইলে পাঠাতে হবে।

সিলেট ডিভিশনাল অফিস, শুভেচ্ছা কমিউনিটি সেন্টারসংলগ্ন বদিকোনা (চণ্ডীপুর), দক্ষিণ সুরমা, সিলেট—এই ঠিকানায়। বরিশাল বিভাগের ঠিকানা—সরদার মঞ্জিল, সিঅ্যান্ডবি রোড, বৈদ্যপাড়া, বরিশাল। খুলনা বিভাগের প্রার্থীরা আবেদনপত্র পাঠাতে পারবেন ‘তাবলিগ মসজিদের গলি, ব্লক-ই, সেক্টর-৭, বাড়ি নম্বর-৯/৪, নিউ মার্কেট উপশহর, যশোর’—এই ঠিকানায়। আবেদনপত্র পাঠানোর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে।

পদ অনুসারে পরীক্ষার ধরন
টিএমএসএসের পরিচালক (এইচআরএম অ্যান্ড অ্যাডমিন) শাহাজাদী বেগম বলেন, ‘সব পদেই আবেদনের শেষ তারিখ ১৫ অক্টোবর। পদ ও যোগ্যতা অনুসারে আবেদন যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে নির্বাচনী তারিখ, সময় ও স্থান। জোনাল ম্যানেজার, এরিয়া ম্যানেজার ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে ৫০ নম্বরের লিখিত ও ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। শাখা হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ৫০ নম্বরের লিখিত, ২০ নম্বরের ব্যাবহারিক এবং ৩০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। সিনিয়র সুপারভাইজার, ফিল্ড সুপারভাইজার পদে শুধু ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।’

পরীক্ষার প্রস্তুতি
শাহজাদী বেগম জানান, ম্যানেজার পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষায় ঋণ কার্যক্রম, শাখার হিসাব-নিকাশ, উন্নয়ন কার্যক্রম, সুপারভিশন, মনিটরিং, মাইক্রো ফিন্যান্স, এমএফআই টার্মস, এনজিও নীতিমালা, পরিচালন, ব্যবস্থাপনা, ইংরেজি, সমসাময়িক ইস্যু ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। ম্যানেজার লেভেলের পদগুলোর জন্য ঋণ কার্যক্রমের সামগ্রিক বিষয়গুলোর ওপর সব সময় ভালো দখল রাখতে হবে। নিয়োগকর্তারা এখানে ঋণসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকে প্রশ্ন করতে পারেন। তেমনি ভাইভা বোর্ডে ঋণ কার্যক্রমের নানা দিক নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে কাজের দক্ষতা জানতে চাইবেন। ভাইভা বোর্ডেও ঋণ কার্যক্রমের সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে।

কম্পিউটার অপারেটর পদের লিখিত পরীক্ষায় হিসাবসংক্রান্ত নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।’ তিনি আরো জানান, ‘সুপারভাইজার লেভেলের মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে এনজিওর ঋণ কার্যক্রম সম্পর্কিত বিষয়ে নানা প্রশ্ন করা হয়। এখানে কাজের সুযোগ পেতে চাইলে ভাইভা বোর্ডে সাধারণ জ্ঞানসহ ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়—যেমন ঋণ বিতরণ, সঞ্চয় আদায়, সমিতি গঠন ইত্যাদি বিষয়ে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। এ ছাড়া জানতে চাওয়া হতে পারে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পড়ার বিষয় বা কেন আসতে চান এ পদে কাজ করতে ইত্যাদি বিষয়েও।’

বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা
সব পদেই ছয় মাস শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হবে। শিক্ষানবিশকাল শেষে সংস্থার স্থায়ী বেতনকাঠামো অনুসারে বেতন দেওয়া হবে। মাসিক বেতন ছাড়াও উৎসবভাতা, সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে বিধি অনুসারে সিটি ভাতা, জীবন বীমা ভাতা দেওয়া হবে। এ ছাড়া ঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মীরা লোড অ্যালাউন্স, ক্রেডিট অ্যালাউন্স, ব্যাংকার অ্যালাউন্স, হাইপারফরম্যান্স বোনাসসহ বেশ কিছু সুবিধা পাবেন।


সর্বশেষ সংবাদ