স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে চাকরি পেলেন হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক হিজড়া
চার মাস ধরে চাকরি খুঁজছিলেন রিয়াদি শামস। কিন্তু হিজড়া হওয়ায় এটি তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। অবশেষে চাকরির পেলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের রাষ্ট্রীয় বাসভবনে কেয়ারটেকার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রিয়াদি।
জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে-র ইংরেজি সার্ভিসকে রিয়াদি শামস বলেন, ‘আমি এখানে এসে কাজ করতাম। প্রথমে মনে করেছিলাম, হয়তো সমাজের সবার মতো এখানেও সেই আচরণটিই আমি পাবো। প্রকৃতপক্ষে আমি এ আচরণটি পাইনি এখান থেকে।’
চার বছর আগে নিজ পরিবারের সদস্যরা রিয়াদিকে পরিত্যাগ করে। তবে সাফল্য অর্জনের জন্য কাজ চালিয়ে যান তিনি। হিসাববিজ্ঞানে ডিগ্রি লাভ করেন। কিন্তু কাজ শুরুর পর উপহাসের শিকার হয়ে কাজটি হারাতে হয় তাকে।
রিয়াদি শামস বলেন, যখন আমি একটা কাজে গিয়েছি তখন আশেপাশের লোকেরা হাসাহাসি করছিল, কটূক্তি করছিল। এটি ছিল একটি বিষাক্ত পরিবেশ।
এখন অবশ্য তার পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের রাষ্ট্রীয় বাসভবনে তিনি একজন সুপরিচিত মুখ। এখানকার অন্য কর্মীরাও তাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেছে।
রেফাত নামের একজন নারী পুলিশ সদস্য জানালেন, হিজড়া সম্প্রদায়ের এ সদস্য ভালোভাবেই কাজ করছেন। তার চলাফেরা, ব্যবহারও অনেক ভালো। সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে কর্মরত অন্যদেরও পড়াশোনার ক্ষেত্রে সহায়তা করেন রিয়াদি শামস। একজন জানালেন, উনি আমাকে সহায়তা করেন। এমনকি মন্ত্রী মহোদয় এবং উনার স্ত্রী-ও তার কাছে পড়তে বলেছেন। উনি খুব ভালো পারেন।
হিজড়ারা বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি। অনেক সময়ই পরিবার তাদের পরিত্যাগ করে। ফলে তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশে মোট হিজড়ার সংখ্যা কত তার সঠিক কোনও পরিসংখ্যান নেই। সম্প্রতি হিজড়াদের স্বতন্ত্র লিঙ্গের স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। তাদের ভোটাধিকারও রয়েছে। তবে সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরির আগে তাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে।