৩৫ ইস্যুতে ‘হ্যাঁ-না’ বলেননি প্রধানমন্ত্রী, দিলেন যুক্তি (ভিডিও)
- ফরহাদ কাদের
- প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০১৯, ০৬:৩৬ PM , আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯, ১২:২৫ AM
সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে সোমবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক। তিনি জানতে চান, বয়স সীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার বিষয়ে দাবিতে সরকারের অবস্থান কী?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী ‘হ্যাঁ’, বা ‘না’ কিছু না বলে ৩৫ থেকে ৩৭ তম বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষায় বিভিন্ন বয়স সীমার শিক্ষার্থীদের ফলাফল তুলে ধরেন। বেশি বয়সীদের বাজে ফলাফল করার পরিসংখ্যান তুলে ধরার আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা হিসাব দিচ্ছি, জবাবটা আপনারা নিজেরাই ঠিক করে নেন এটা দেওয়া ঠিক কি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা হিসাব নিয়েছি, পিএসসি চেয়ারম্যানকে ডেকেছি, কথা বলেছি। ৩৫ তম বিসিএসে ২৩ থেকে ২৫ বছর বয়সী যারা, তাদের পাসের হার ৪০.৭ ভাগ। ২৫ থেকে ২৭ বছর যাদের বয়স, তাদের পাসের হার ৩০.২৯ ভাগ। ২৭ থেকে ২৯ বছর যাদের বয়স, তাদের পাসের হার ১৩.১৭ ভাগ। আর ২৯ বছরের ঊর্ধ্বে যারা, তারা পাস করেছে ৩.৪৫ ভাগ।’
‘৩৬ তম বিসিএসে ২৩ থেকে ২৫ বছর যাদের বয়স, তারা পাস করেছে ৩৭.৪৫ ভাগ। ২৫ থেকে ২৭ বছর যাদের বয়স, তাদের পাস করেছে ৩৪.৭৮ ভাগ। ২৭ থেকে ২৯ বছরে ১৪.৮৯ ভাগ পাস করেছে। ২৯ এর ঊর্ধ্বে যাদের বয়স, তাদের পাসের হার ৩.২৩ ভাগ।’
‘৩৭ তম বিসিএসে ২৩ থেকে ২৫ যাদের বয়স, তাদের পাস করেছে ৪৩.৬৫ ভাগ। ২৫ থেকে ২৭ বছর যাদের বয়স, তারা পাস করেছে ২৩.৩৫ ভাগ। ২৭ থেকে ২৯ বছর যাদের বয়স, তারা পাস করেছে ৭.২০ ভাগ। আর ২৯ বছরের ঊর্ধ্বে যাদের বয়স, তারা পাস করেছে ০.৬১ ভাগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি ৩৫ পর্যন্ত যান, তাদের অবস্থাটা কী দাঁড়াবে, আমাকে একটু বুঝিয়ে বলেন। তখন তো বিয়ে সাদী হবে, ছেলে মেয়ে হবে, বউ সামলাতে হবে, ছেলে মেয়ে সামলাতে হবে, ঘর সামলাতে হবে, আর পরীক্ষা দিতে হবে। তখন তো আরো করুণ অবস্থা হয়ে যাবে।’
‘কাজ করার একটা সময় থাকে, এনার্জি থাকে। ...৩৫ বছরে পরীক্ষা দিলে এরপর রেজাল্ট, এরপর ট্রেইনিং। এই ট্রেইনিং শেষ হতে আরো দুই বছর লাগে। ৩৭ গেল। ৩৭ এর চাকরিতে ঢুকলে চাকরি ২৫ বছর না হলে কিন্তু ফুল পেনশন পাবে না। ঠিক আছে পেনশন না পেল।’
‘সরকার কাদের দিয়ে চালাব। আমরা সব সময় বলি, যারা যুবক, যারা মেধাবী, যাদের কর্মক্ষমতা ভালো, তাদেরকে নিয়েই তো আমার দেশের উন্নয়নের কাজটা করাব। ধীরে ধীরে কাজের গতিও একটু স্লথ হয়, বয়সও বাড়ে।’
বয়স সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব সংসদে নাকচ করার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। জানান, এই প্রস্তাব নাকচের সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়।’
‘পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত কণ্ঠ ভোটে পাস হলে কী হবে। তারা আন্দোলন করে যাবে। ঠিক আছে, ভালো কথা আন্দোলন করুক। আমি তো আর আন্দোলনে বাধা দেব না। আন্দোলন তো ভালো জিনিস। আন্দোলনটা করলে অন্তত রাজনীতিটা শিখবে ভালো করে। কিন্তু যদি কারো প্ররোচনায় করে থাকে, তাহলে কী হবে সেটা বুঝতেই পারেন।’
পড়াশোনা শেষ করতে এখন আগের চেয়ে কম সময় লাগার বিষয়টিও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘ধরে নেই যদি একটা ছেলে মেয়ে যদি নিয়মিত পড়াশোনা করে তাহলে ১৬ বছরে এসএসসি পাস করে। ১৮ বছরে ইন্টারমিডিয়েট। চার বছর অনার্স, এক বছর মাস্টার্স। ২৩ বছরের মধ্যে পরীক্ষা দিতে পারে সরকারি চাকরির জন্য। এক দুই বছর দেরি হলেও ২৪-২৫ বছর হতে পারে।’