বিসিএসে এই প্রথম তৃতীয় পরীক্ষক নিয়োগ
সত্যিই কি পরীক্ষায় ফেল করেছি, না-কি পরীক্ষক খাতা দেখতে ভুল করেছেন? ২১ নম্বরের জায়গায় ১২ লিখে রাখাও তো অস্বাভাবিক নয়। তবে পিএসসি বলছে- এই ভুল আর হবে না। চাকরির বাজারে বিসিএসে যেহেতু সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয় এবং পরীক্ষকের ভুলে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হন; তাই এবার তৃতীয় পরীক্ষক রাখা হচ্ছে। ৩৮তম লিখিত থেকে এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে জানা গেছে। আর এ কারণেই ৩৮তম ফল লিখিত ফল হতে কিছুটা দেরি হবে বলে জানা গেছে।
কমিশন কর্মকর্তারা বলছেন, পিএসসিতে সব সময় একজন পরীক্ষক লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতেন। কিন্তু ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি খাতা দু’জন পরীক্ষক মূল্যায়ন করছেন। এই দুই পরীক্ষকের প্রদত্ত নম্বরের ব্যবধান ২০ শতাংশের বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা পাঠাচ্ছে পিএসসি। ফলে পরীক্ষার্থীদের মেধা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিসিএস পরীক্ষার উত্তরপত্র সঠিকভাবে দেখা হচ্ছে না-এমন অভিযােগ তুলে পরীক্ষার্থীরা তা পুনর্মূল্যায়নের দাবি করে আসছেন দীর্ঘদিন। সেই অনুযায়ী ৩৮তম বিসিএস থেকে লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র দু'জন পরীক্ষক দিয়ে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে পিএসসি। দুইজন পরীক্ষকদের দেয়া নম্বরের ব্যবধান ২০-এর বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষক উত্তরপত্র দেখবেন।
এই নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রথম পরীক্ষক এবং দ্বিতীয় পরীক্ষকের নম্বরের গড় যােগফল পাবেন পরীক্ষার্থীরা। দু’জন পরীক্ষাকের নম্বর ২০ এর কম বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষক খাতা দেখবেন। এখানে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছাকাছি প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষকের মধ্যে যার নম্বরটি থাকবে, সেটি আমলে নিয়ে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। প্রাপ্ত খরব অনুযায়ী, ৩৮তম বিসিএসে উল্লেখযােগ্য সংখ্যক পরীক্ষার্থীর খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠানাে হয়েছে।
পিএসসির সংশ্লিষ্টরা জানান, এত দিন পর্যন্ত বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা একজন পরীক্ষক দেখতেন। ফলে মাঝেমধ্যেই পরীক্ষার্থীরা বঞ্চনার শিকার হতেন। অতীতেও অনেকে ভালাে পরীক্ষা দিয়ে কাঙ্খিত নম্বর পাননি বলে অভিযােগ রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের দাবি, বিসিএসের মতাে প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষায় যেখানে এক-দুই নম্বরেই ভাগ্য বদলে যায়, সেখানে অনেক সময়েই পরীক্ষকের অবহেলায় অনেকেই কাঙ্খিত নম্বর পান না। তবে দুইজন পরীক্ষকের খাতা মূল্যায়নের কারণেই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার জন্য পিএসসিকে অতিরিক্ত ৫ থেকে ৬ মাস সময় চলে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মােহাম্মদ সাদিক বলেন, প্রথমবারের মতাে ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা আমরা দু’জন পরীক্ষকের দ্বারা মূল্যায়ন করেছি। ঈদের পর থেকে কিছু কিছু খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
তৃতীয় পরীক্ষকের কারণেই ফল মূল্যায়নে দেরি হচ্ছে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ভালাে কিছু করতে একটু সময় লাগেই। চাকরিপ্রত্যাশীদের এটা বুঝতে হবে। আমরা চাচ্ছি, খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি নিখুঁত হােক। প্রতিটি খাতা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে আশা করছি দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
পড়ুন:বিদেশ থেকে শিক্ষক আমদানি: শিক্ষাবিদদের চোখও কপালে উঠলো!