ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে আইসিটি প্রশিক্ষণ, স্বাবলম্বী গ্রামের যুবরা
টেকনোলজি এমপাওয়ারমেন্ট সেন্টার অন হুইলস ফর আন্ডারপ্রিভিলেজড রুরাল ইয়ং পিপল অব বাংলাদেশ (টেকাব) মূলত সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত গ্রামের যুবদের আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রকল্প। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের এই প্রকল্পে বিনা খরচে গ্রামের ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যুবক ও যুব-মহিলারা এই প্রশিক্ষণটি পাচ্ছেন। মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট প্রশিক্ষণের সঙ্গে আউটসোর্সিংয়ের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালের ১ মে থেকে গত মার্চ পর্যন্ত ৯ হাজার ৯শ’ ৬৭ জন টেকাব প্রশিক্ষণ নেন; যা এপ্রিলে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। লক্ষ্য ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ হাজার ৮শ’ ৪০ জন গ্রামীণ যুবকে আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদান।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য প্রযুক্তিতে যুবক সমাজকে দক্ষ করে তুলতে কাজ করছে সরকার। টেকাব প্রকল্পের মাধ্যমে পিছিয়ে থাকা গ্রামীণ যুবদের এগিয়ে নেওয়ায় সরকারের লক্ষ্য। এই প্রকল্পে গ্রামে গিয়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষণ ভ্যানে আইসিটি প্রশিক্ষিণ দেয়া হয়। প্রতি মাসে পূর্ব নির্ধারিত ৭টি গ্রামে প্রতি ব্যাচে ৪০ জন যুবক ও যুব-মহিলাকে এই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। চলতি মে মাসে যেসব উপজেলার গ্রামে প্রশিক্ষণ চলছে, সেগুলো— গাজীপুরের কাপাসিয়া, নেত্রকোনার মদন, কুমিল্লার দ্বেবিদার, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, খুলনার রুপসা, মাদারীপুরের রাজৈব এবং দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ। এছাড়া আগামী মাসে নরসিংদীর পলাশ, ময়মনসিংহের ভালুকা, কুমিল্লার বরুড়া, সিরাজগঞ্জের কামাখন্দ, খুলনার ডুমুরিয়া, মাদারীপুরের শিবচর এবং দিনাজপুরের বিরাজপুরে টেকাবের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
প্রশিক্ষণটি কেনো নেবেন: একজন যুবক বিশেষ করে যে বেকার অবস্থায় আছে তার জন্য টেকাব প্রকল্পের আইসিটি প্রশিক্ষণ বিশেষ উপকারী হতে পারে। এক মাস মেয়াদী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিনামূল্যে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে সফলভাবে উত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে একদিকে চাকরি ক্ষেত্রে সুযোগ বাড়বে। তেমনি এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের মর্যাদা দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের ব্যাংক ঋণে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। যা একজন বেকার যুবকের আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা করবে।
কারা কীভাবে প্রশিক্ষণটি নিতে পারবেন : প্রশিক্ষণার্থীকে অবশ্যই ১৮-৩৫ বছরের যুব হতে হবে। প্রতিটি ব্যাচে ৪০ জন (সিলেট বিভাগে ২৪ জন) যুব’র মধ্যে সমান সংখ্যক যুবক ও যুব-মহিলা হতে হবে। যুবকদের জন্য এইচএসসি পাস ও যুব-মহিলাদের জন্য এসএসসি পাস হওয়া বাধ্যতামূলক। সকালে ও বিকেলে সমান সংখ্য প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কোন জেলার কোন উপজেলার কোন গ্রামে কখন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে তা দুই মাস আগেই নির্ধারিত হয়। প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্ত হতে হলে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যোগাযোগ করতে হবে। আবেদনকারী ৪০ জনের অধিক হলে পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়।
রাজধানীর মতিঝিলে যুব ভবনে টেকাব প্রকল্পের বিষয়ে কথা হয় প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মনির হোসেনের সঙ্গে। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য টেকাব প্রকল্পের অধীনে আইসিটি প্রশিক্ষণটি নেয়া উচিত। এর মাধ্যমে চাকরি ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। তাছাড়া মাসব্যাপী এই প্রকল্পে দুইদিন আউটসোর্সিংয়ের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। বর্তমানে আউটসোর্সিং করে প্রচুর যুবক স্বাবলম্বী হচ্ছে।