প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনকারীরা: কর্মসূচির সিদ্ধান্ত কাল
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র পরিষদ (বাসাছাপ)। এ নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তবে এখনো আশানুরুপ কোন ফল পাননি আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা।
দাবি আদায়ে শিগগিরই বড় কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য চেষ্টা চলছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে তা সম্ভব হতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা।
সর্বশেষ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করে সংগঠনটি। তবে সেদিন পুলিশের বাঁধার কারণে সে কর্মসূচি সফল হয়নি। ওইদিন বাসাছাপ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেনসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে যাওয়ায় শিডিউল থাকায় ওই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি ছিলো। ফলে সেখানে তাদেরকে দাড়াতে দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
প্রায় মাসখানেক বিরতির পর ফের বড় কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সে অনুযায়ী আগামীকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে বৈঠকে বসবেন বলে তারা জানিয়েছেন। এ আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নব নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন বলেও তারা জানিয়েছেন।
বাসাছাপ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করার চেষ্টা করছি। শুক্রবার কলা ভবনে একটি বৈঠকের মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এবার বড় আকারে কিছু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ডাকসু ভিপি নুরুল হকের সাথে তার কথা হয়েছে। তিনি এ আন্দোলনের সাথে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন। সামনে বড় কর্মসূচি দেওয়া হলে তাতে তাকে ডাকা হবে।’ এসময় নুরুল হক সেসব কর্মসূচিতে আসবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত ১১ মার্চ চাকরিপ্রত্যাশীদের দীর্ঘদিনের এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি জানান। এ ব্যাপারটি বিবেচনা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
রওশন এরশাদের ওই বক্তব্যের পর বেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরাও। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে দাবি জানানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন আন্দোলনকারীরা।
বাসাছাপ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এজন্য যোগাযোগও করা হয়েছে।’ খুব শিগগিরই তার সাথে দেখা করার সুযোগ হতে পারে বলেও জানান তিনি।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করা হতে পারে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে সেটা হলে না মানার সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এজন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার যৌক্তিকতা জনপ্রাশসন প্রতিমন্ত্রীর কাছেও তুলে ধরেছেন তারা।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সংসদীয় কমিটি পাঁচবার চাকরির বয়স ৩৫ করার বিষয়টি সমর্থন করে সুপারিশ করেছে। তারপরও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে এ ব্যাপারে জানানো হলে সেসময় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন বলে চাকরিপ্রার্থীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।