কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসআইরা

কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে এসআইরা
কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে এসআইরা  © টিডিসি ফটো

কাফনের কাপড় জড়িয়ে সচিবালয়ের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন অব্যাহতি পাওয়া সাব-ইন্সপেক্টরা (এসআই)। সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে অব্যাহতি পাওয়া প্রায় দুই শতাধিক এসআই সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। প্রশাসনের কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় এবার কাফনের কাপড় জড়িয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। এর আগে সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। 

জানা যায়, চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন অব্যাহতিপ্রাপ্তরা। ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিতদল সাক্ষাৎ করেন। সচিবের আশ্বাসে সেদিন জানুয়ারি কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন তারা। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বাধ্য হয়ে গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) আবার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টরা। একই দিন আবার জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে আন্দোলনকারী ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল দেখা করেন। পরে আরেকটি দল সমন্বয়কদের সাথেও দেখা করেন। তাদের কাছ থেকে কোন আশ্বাস না পাওয়া সন্ধ্যা থেকে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন অব্যাহতি পাওয়া সাব-ইন্সপেক্টরা (এসআই)। প্রশাসন থেকে এখনও কোন আশ্বাস না পাওয়ায় আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে কাফনের কাপড় জড়িয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তারা। 

অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআই মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা দাবি আদায়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো প্রকার আশ্বাস এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। গতকাল (সোমবার) থেকে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি, প্রশাসন থেকে একটাবারের জন্য কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। তাই বাধ্য হয়েই আজ কাফনের কাপড় জড়িয়ে আন্দোলন করতে হচ্ছে। 

তিনি আরো বলেন, অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকেই সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছি। তিলে তিলে মরার চেয়ে একেবারে মরাই ভালো। দাবি আদায় না করা পর্যন্ত আমরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই দীপ্ত মিত্র বলেন, আমরা অসহায়ের মতো রাস্তায় পড়ে আছি, কেউ দেখতে পর্যন্ত আসেনি। পরিবারের হাল ধরার সময়ে, পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি। আমরা দ্রুত চাকরিতে জয়েন করতে চাই। পরিবারের হাল ধরতে চাই। ভালোভাবে বাঁচতে চাই। চাকরি ফিরে না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা।

প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ দেয়া ৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিভিন্ন সময় ৪ ধাপে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তাদের ৩২১ জনকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি দেয়া হয়। সর্বশেষ চলতি মাসেও আরও ৮ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ মাঠে উচ্চস্বরে হইচই করার অভিযোগ রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ