১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৪০

এক বছরে বৈদিশিক কর্মসংস্থান কমেছে ৩ লাখ

  © ফাইল ফটো

বিদেশে চাকরি করতে যাওয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। চলতি বছর ৭ লাখ ১২ হাজার ৩৪২ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে নির্মাণ শ্রমিকসহ নানা পেশায় কাজ করতে গেছেন। অথচ গত বছরও ১০ লাখের বেশী কর্মী বিদেশে চাকরির জন্য গিয়েছিলেন।

এদিকে অভিবাসন খরচ বা বিদেশে যাওয়ার খরচও বেড়ে চলছে। একদিকে বিদেশগামী কর্মী হ্রাস অন্যদিকে খরচ বৃদ্ধি দেশের অভিবাসন খাতের জন্য বিপদসংকেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ লাখ ১২ হাজার ৩৪২ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। এটি গত বছরে বিদেশ যাওয়া চাকরি-শ্রমজীবিদের সংখ্যার চেয়ে প্রায় তিন লাখ কম। চলতি বছরের বাকি সময়েও খুব বেশী কর্মী বিদেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান নেই। যদিও সদ্য বিদায়ী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম ২০১৮ সালে অন্তত ১২ লাখ বৈদিশিক কর্মসংস্থান হবে বলে ঘোষনা দিয়েছিলেন।

মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবে কাজের ক্ষেত্র ও সুযোগ কমে যাওয়ায় বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি ওই দেশ থেকে অনেক নারী শ্রমিক যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশে ফেরত এসেছে। নিপীড়নের শিকার অনেক নারী এখনও সৌদি আরবের রিয়াদ ও জেদ্দায় বাংলাদেশ মিশনে রয়েছে। এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। একইসাথে গত আট মাসে সৌদি থেকে এক হাজারের বেশী পুরুষ শ্রমিকও চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।

কুয়েত, কাতার, ব্রুনাই এবং মালেয়েশিয়াতেও বিভিন্ন ধরণের সমস্যা মোকাবেলা করছেন বাংলাদেশীরা।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রৌনক জাহান বলেন, বৈশ্বিক নেতৃত্বে পরিবর্তন, অর্থনৈতিক সংকট এবং বাংলাদেশের গন্তব্য দেশগুলোতে নানা ধরণের পরিবর্তন ও সংস্কারের ফলে ২০১৮ সালে বৈদিশিক কর্মসংস্থান কমে গেছে। তিনি বলেন, নতুন গন্তব্য দেশ খুঁজে বের করাসহ এ খাতে বৈচিত্র্য এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার উপর জোর দিতে হবে। কূটনৈতিক তৎপরতাও বেড়েছে। ২০১৯ সালে বৈদিশিক কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশী ১৬৮টি দেশে কাজের জন্য গিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগের কর্মসংস্থান হয়েছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। কয়েক বছর ধরে ওই দেশগুলোতে কর্মী যাওয়ার হার কমে এসেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে গোটা অভিবাসন খাতে।