আন্দোলন করেই কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল বাধ্য করতে হবে: ছাত্রফ্রন্ট
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (একাংশ) সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায়কে গণবিরোধী রায় আখ্যায়িত করে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের গণবিরোধী রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এ ধরনের বৈষম্যমূলক রায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও তা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাই। কোনো দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতা করবার যৌক্তিক উদ্দেশ্যে চাকরির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কোটা বা অংশ বরাদ্দ রাখা যায়। আমাদের দেশেও সেরকম বহাল রাখা প্রয়োজন বলেই আমরা মনে করি। তবে ৩০ শতাংশ পরিমাণ কোটা বরাদ্দ রাখা একটি বৈষম্যমূলক সমাজে সেই বৈষম্যকে আরো তীব্র করে তুলবে।
আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করা কিংবা তাদের পরিবারের সহযোগিতার প্রশ্নেও আমাদের কোনো দ্বিধা নেই। তাদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা বজায় রেখেই আমরা বলতে চাই এই ৩০ শতাংশ কোটা সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় তা থাকতে পারে। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আজকের সময়ে এই তীব্র বেকার সংকটের কারণ এই বৈষম্যমূলক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক কাঠামো। এর ফলেই ঘরে ঘরে আজ বেকারত্ব এত প্রকট আকার ধারণ করেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকার হতাশাগ্রস্ত হয়ে আজ সমাজে বিরাজমান। তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে তা তারা জানে না। রাষ্ট্র তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছেনা। পুঁজিবাদের ক্ষয়িষ্ণু যুগে তার কোনো সুযোগও বাস্তব নয়। এরকম একটি সংকটগ্রস্ত পরিস্থিতিতে পুনরায় সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জনমানুষের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরো সংকুচিত করবে, অনিশ্চয়তা আরো বৃদ্ধি করবে। অতীত সময়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্ররা আন্দোলন করেছিলো। বর্তমান সময়ে আন্দোলন করেই এই রায় বাতিলে বাধ্য করতে হবে।
এর আগে, গতকাল বুধবার (৫ জুন) সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।