লোভনীয় বেতনে ভূতুড়ে চাকরির বিজ্ঞাপন বেড়েছে, কীভাবে বুঝবেন

করোনাকাল থেকে ভূতুড়ে চাকরির বিজ্ঞাপন বেড়েছে
করোনাকাল থেকে ভূতুড়ে চাকরির বিজ্ঞাপন বেড়েছে  © প্রতীকী ছবি

পত্রিকায় বা অন্য কোনও মাধ্যমে লোভনীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখলেন, পরীক্ষাও দিলেন। সঠিক কাগজপত্র জমা দিয়ে নির্বাচিত হওয়ার আশাও করলেন। তবে চাকরি পেলেন না। কেন বা অন্য কেউই সে চাকরি পেলেন না। বাস্তবে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। 

চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে এবং পরীক্ষা নিয়েও শেষ পর্যন্ত নিয়োগ হচ্ছে না। নিয়োগের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে বিশ্বের কিছু নামীদামি সংস্থা। এভাবে চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেও যে নিয়োগ করা হয় না, সেগুলোকে বলে ‘ঘোস্ট জব’। সাম্প্রতিক কালে এ ‘ভূতুড়ে চাকরি’র বিশ্ব জুড়ে বেড়েছে।

‘ভূতুড়ে চাকরি’ এমন এক চাকরি, যার বিজ্ঞাপন সংস্থার ওয়েবসাইটে থাকলেও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। আরও ভালোভাবে বললে, ‘ভূতুড়ে চাকরি’ হল সে শূন্যপদ যার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তবে সে শূন্যপদ পূরণের অভিপ্রায় তাদের থাকে না।

কেন এমন করে সংস্থাগুলো? প্রতিষ্ঠানভেদে ‘ভূতুড়ে চাকরি’র কারণ ভিন্ন হতে পারে। এর একটি সম্ভাব্য কারণ হল, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মী নিয়োগে সংস্থার বাজেটে ঘাটতি থাকা। বাজারে নির্দিষ্ট চাকরির জন্য কেমন প্রতিভা রয়েছে, তা যাচাই করার জন্যও ‘ভূতুড়ে চাকরি’র ব্যবস্থা করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আরেকটি সম্ভাবনা হল, যে সময়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল এবং যখন নিয়োগ হচ্ছে, তার মধ্যে পদটির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে। অনেক সংস্থা আছে, যারা বিভিন্ন কারণে নিয়োগ স্থগিত রেখেছে, তারাও ‘ভূতুড়ে চাকরি’র বিজ্ঞাপন দেয়।

‘হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল’র সমীক্ষা অনুযায়ী, করোনা মহামারির কারণে পদত্যাগ ও কর্মী ছাঁটাই বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ‘ভূতুড়ে চাকরি’র সংখ্যা বাড়িয়েছে। সংস্থাগুলো ভবিষ্যতে নতুন কর্মী নিয়োগের বিষয়ে অনিশ্চিত থাকায় ‘ভূতুড়ে চাকরি’র বিজ্ঞাপন দেয়।

আরো পড়ুন: ১৭তম নিবন্ধনধারীদের কপাল পুড়ছে

‘ভূতুড়ে চাকরি’র বিজ্ঞাপনে অনেক সময় কী কাজ করতে হবে, তা উল্লেখ থাকে না। প্রকৃত চাকরির বিজ্ঞাপনে কাজের বিবরণ, যোগ্যতা ও দায়িত্বের কথা উল্লেখ থাকে। একজন প্রার্থী চাকরির আবেদন করে ভালো পরীক্ষা দিয়েও যদি কোনও সাড়া না পান, তা হলে ‘ভূতুড়ে চাকরি’র খপ্পরে পড়েতে পারেন তিনি।

কোনও সংস্থা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে একই শূন্যপদের জন্য বার বার বিজ্ঞাপন দেয়, তা হলেও বুঝতে হবে, সেটি ‘ভূতুড়ে চাকরি’। সে ক্ষেত্রে আবেদন না করাই ভালো। একটি সংস্থার কর্মী সম্প্রতি ‘থ্রেড’ এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, তার সংস্থা ‘ভূতুড়ে চাকরি’র জন্য প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মৌরিন ডব্লিউ ক্লাউ নামে এ নারী বলেন, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভূতুড়ে চাকরির প্রবণতা রয়েছে। তিনি তার সংস্থার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা করেন। তাকে ভূতুড়ে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ নিতে বলা হয়েছিল। তবে তিনি তার এবং চাকরিপ্রার্থীদের সময় নষ্ট করতে অস্বীকার করেন। খবর: আনন্দবাজার।


সর্বশেষ সংবাদ