দিনে ভাতা ৫০০ ও ফ্রি প্রশিক্ষণে সরকারিভাবে তিন বছরে ২৯ হাজার ফ্রিল্যান্সার, আবেদন যেভাবে
আগামী তিন বছরে দেশে প্রায় ২৯ হাজার তরুণ ফ্রিল্যান্সার তৈরি করবে সরকার। এই প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় ভাতা হিসেবে দিনে ৫০০ টাকা ও প্রশিক্ষণে কোনো ফি দিতে হবে না।
সরকারের নতুন এই প্রকল্পে সব মিলিয়ে খরচ হবে ৩০০ কোটি টাকা। এটির নাম ‘দেশের ৪৮টি জেলায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্প’। প্রকল্পের মেয়াদ চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় একনেক সভায় সব মিলিয়ে ১০টি প্রকল্প উঠতে পারে অনুমোদনের জন্য।
যেভাবে প্রশিক্ষণ পাওয়া যাবে
এই প্রশিক্ষণ দিতে প্রতিটি জেলায় ২৫টি কম্পিউটার ও হাইস্পিড ইন্টারনেট-সংবলিত দুটি ল্যাব স্থাপন করা হবে। প্রতিটি ল্যাবে ২৫ জন করে প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। প্রতি জেলায় একেক ব্যাচে ৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষেরা আবেদন করতে পারবেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর প্রশিক্ষণার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
প্রশিক্ষণার্থীদের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তিন মাসের এই প্রশিক্ষণকালে প্রত্যেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে ভাতা পাবেন। আর খাবারের জন্য দৈনিক ৩০০ টাকা হারে দেওয়া হবে। এভাবে সারা দেশে সব মিলিয়ে ২৮ হাজার ৮০০ জন ফ্রিল্যান্সার তৈরি করা হবে, যাঁদের অর্ধেকই হবেন নারী।
ভর্তি কীভাবে
প্রতি ব্যাচে ভর্তির জন্য অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আগ্রহী প্রশিক্ষণার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বাছাই পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে নির্বাচন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে একটি প্রশ্ন ব্যাংক থাকবে। প্রতিটি ব্যাচের জন্য প্রশ্ন নবায়ন করা হবে। এই নবায়নের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালককে সভাপতি ও প্রকল্প পরিচালককে সদস্যসচিব করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে।
জেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালককে সভাপতি এবং সহকারী পরিচালককে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের কমিটি প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
প্রশিক্ষণে কী কী থাকবে
পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রশিক্ষণার্থীদের দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তুলতে হাতে কলমে ৮টি বিষয় শেখানো হবে।
তিনি বলেন, “ফ্রিল্যান্সিং সৃষ্টির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোর বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অনলাইনে তাদের কাজ করতে করা। এজন্য প্রথমেই ইংরেজিতে যোগাযোগ করার মতো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাই এই প্রশিক্ষণে ফ্রিল্যান্সিংয়ের উপযুক্ত একটি বেসিক ইংরেজি শেখানোর কোর্স থাকবে।
“এছাড়াও কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন, কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে হয়, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সফট স্কিল ট্রেইনিং দেওয়া হবে।”