সুযোগ থাকলেও অনেক কম কর্মী যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়

দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের পতাকা
দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের পতাকা  © সংগৃহীত

এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মীর চাহিদা প্রতিবছর বাড়লেও সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সরকারিভাবে দেশটিতে কয়েক হাজার কর্মী গেলেও বেসরকারি খাতে যাচ্ছেন হাতে গোনা।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, চলতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০ হাজার কর্মী পাঠানোর কোটা পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন খাতে কাজ করতে গেছেন ৪ হাজার ৫৪০ জন কর্মী। এর মধ্যে ৪ হাজার ২০০ জন পাঠিয়েছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)। আর বাকি মাত্র ৩৪০ জন পাঠিয়েছে বেসরকারি খাতের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো।

বোয়েসেলের মাধ্যমে কোরিয়া যেতে কর্মীদের তেমন বেশি খরচ নেই। বোয়েসেলে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা। আর যেতে উড়োজাহাজভাড়া ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। মাসে বেতন অন্তত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অতিরিক্ত সময় কাজ করলে কেউ কেউ তিন লাখ টাকাও আয় করতে পারেন বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে থাকা ও খাওয়ার খরচ চালায় কোম্পানি।

জানা গেছে, একজন কর্মী একবার গিয়ে আট মাস থাকতে পারবেন। এরপর তিন মাসের ছুটি কাটিয়ে আবার গিয়ে আট মাস কাজ করতে পারবেন। ছুটিতে আসা-যাওয়ার বিমানভাড়া দেবে নিয়োগকর্তা। মাসে বেতন দেড় লাখ টাকার বেশি। কোরিয়ান ভাষা শেখা ও কারিগরি জ্ঞানের বাধ্যবাধকতা নেই। তাই কর্মীরা বেশি আয়ের আশায় যেতে চান দেশটিতে। তবে এক বছরের নিচে কোনো চাকরির চাহিদাপত্র সত্যায়ন করছে না কোরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস। তাই আটকে আছে খণ্ডকালীন কাজে কর্মী পাঠানো।

কোরিয়ায় কর্মী পাঠাতে গত ২৬ অক্টোবর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে রিক্রুটিং এজেন্সি হোপ হিউম্যান রিসোর্সেস। কোরিয়ার কৃষি খাতে বাংলাদেশি কর্মীদের পাঠানোর সুযোগ হাতছাড়া না করার অনুরোধ জানিয়ে এতে বলা হয়, গত দুই বছরে এ খাতে বাংলাদেশ থেকে একজন কর্মীও পাঠানো যায়নি। কোরিয়ার হামপিয়াং-গুণ স্থানীয় সরকারের সঙ্গে রাজবাড়ির রামকান্তপুর ইউনিয়ন ২০ জন কর্মী পাঠানোর সমঝোতা স্মারক সই করেছে। পর্যায়ক্রমে ২০০ কর্মী পাঠানো যাবে। হোপ হিউম্যান রিসোর্সেস এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর ক্ষমতা দিয়েছে রামকান্তপুর ইউনিয়ন। স্বল্প খরচে বেশি আয়ের দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ উন্মুক্ত করার দাবি জানানো হয় তাদের চিঠিতে।

তবে অভিবাসন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেসরকারি খাত কর্মী পাঠাতে বাড়তি টাকা নিয়ে বাণিজ্য করার চেষ্টা করবে। কোরিয়া পাঠানোর নামে কেউ কেউ প্রতারণাও করতে পারে। কোনোভাবেই কোরিয়ার বাজার নিয়ে ঝুঁকি তৈরি করা যাবে না। তাই ভালো করে যাচাই–বাছাই না করে কাউকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। তবে দূতাবাস চাইলেই এটি যাচাই–বাছাই করে দেখতে পারে। এতে আরও বেশি কর্মী পাঠানোর সুযোগ তৈরি হবে।

কোরিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়াটি পাঁচটি ধাপে শেষ হয়। শুরুতে অনলাইন নিবন্ধন। এরপর লটারি করে বোয়েসেল। বিজয়ীদের কোরিয়ার ভাষাগত দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হয়। এটি পাস করলে দক্ষতা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এরপর পুলিশের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ভিসার আবেদন করা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ