একই দিনে প্রাথমিক ও ব্যাংকের পরীক্ষা, হাইকোর্টে রিট করলেন পরীক্ষার্থী
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম পর্বের লিখিত পরীক্ষা ও ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের সদস্যভুক্ত ১০টি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদের লিখিত পরীক্ষা একই দিনে বিপাকে পড়েছেন হাজারো চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীরা। যেকোনো একটি পরীক্ষা পিছিয়ে নেওয়ার জন্য হাইকোর্টে একটি রিট করে তারা।
গতকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন পরীক্ষার্থীদের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান। রিট আবেদনটির শুনানির জন্য বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে ২৫৮নং লিস্টে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেটি আজ মঙ্গলবার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
ব্যাংকার্স সিলেকশন সিনিয়র অফিসার পোস্টের লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ হাজার ৫৭৪ জন (১০৫৭৪)। এছাড়াও প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। এই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এই পরীক্ষাগুলো তাদের শেষ পরীক্ষা। তারা বলছেন তাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা প্রায় শেষ।
রিটের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা দেওয়া তাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই এই বিষয়গুলো আমরা রিটে এই তুলে ধরেছি। বর্তমানে বেকারত্বের যুগে এই রকম গুরুত্বপূর্ণ দুটি পরীক্ষা একই দিনে পড়ায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। মামলাটি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে ২৫৮নং লিস্টে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেটি মঙ্গলবার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে ।
একজন পরীক্ষার্থী আব্দুল কাদের দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমার বাসা দিনাজপুর, অনেক কষ্ট করে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় আসি পরীক্ষা দিয়ে প্রিলিমিনারি পাশ করার পরেও এখন প্রাথমিক এবং ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার এর রিটেন পরীক্ষার তারিখ একসাথে দেওয়াতে আমি ব্যাংকের রিটেন এক্সাম দিতে বঞ্চিত হচ্ছে। আমার চাকরির বয়স আর ছয় মাসের মত আছে তাই এই শেষ সময়ে এসে এরকম একটা সুযোগ মিস করা আমার জন্য অনেক হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি উনারা যেন পরীক্ষার সময় সমন্বয় করে।
ব্যাংকের লিখিত এবং প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থী আলমগীর হোসেন জানান, দুটিই আমাদের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ ৷ কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের ওইদিন যেকোনো একটি পরীক্ষা ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনটি বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ এমতাবস্থায় আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির কাছে আবেদন করি যাতে আমাদের ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষাটা পিছিয়ে দিয়ে আমাদের দুটি পরীক্ষাতেই অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেয় ৷ কিন্তু উনারা আমাদের আবেদনে একেবারেই কর্ণপাত না করে আট তারিখে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকে৷ আমরা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে তাদের কাছে আবেদনপত্র দিয়ে আসি তবুও কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানিয়ে দেয় পরীক্ষা ওইদিনই হবেই ৷
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের (বিএসসিএস) পরিচালক মো. সাঈদুর রহমান খান বলেন, সিনিয়র অফিসার পদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে কেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে এবং আসনবিন্যাসও প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এ পরীক্ষা আর পেছানোর সুযোগ নেই।