১৫ বছরে স্কুল-কলেজে এক লাখ ২২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতার সময়ে সারাদেশের স্কুল ও কলেজে প্রায় এক লাখ ২২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে এসব শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা।
নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষকের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল) এ সংখ্যা ৬৫ হাজার ১২৬ এবং কলেজ পর্যায়ে এ সংখ্যা ৫৬ হাজার ৭১৬। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এবং সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০০৯-২০২৩’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এনটিআরসিএর অধীনে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি নিবন্ধন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময়ে এমপিওভুক্ত ৮৫ হাজার ৪৫৬ জন নিবন্ধনধারীকে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজে) শূন্য পদে সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া এনটিআরসিএ কর্তৃক গত ২২ ডিসেম্বরে প্রকাশিত ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এসব নির্বাচিত প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
সূত্র: উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০০৯-২০২৩
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, পিএসসির মাধ্যমে সরকারি কলেজগুলোতে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে উত্তীর্ণ ৭ হাজার ৩৪৫ জন শিক্ষককে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে; আর নন-ক্যাডার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে ৬ হাজার ৪১২ জন নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১ হাজার ৪০৫ জন শিক্ষক, ৩ হাজার ৬৯৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে।
এছাড়া “সেকেন্ডারী এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ)” এর ৮১৪ জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ও ৪৬১ জন ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের মোট ১ হাজার জন (প্রতি প্রতিষ্ঠান একজন) শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৮২ জন আর কলেজ পর্যায়ে ৮৬ হাজার ২৯১ জন শিক্ষক ছিলেন। ২০২৩ সালে এসে মাধ্যমিক পর্যায়ে সেটি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৬০৮ জন; যা বেড়েছে ৬৫ হাজার ১২৬ জন, বৃদ্ধির হার ৩০ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর কলেজে পর্যায়ে এসে সেটি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭ জন; যা বেড়েছে ৫৬ হাজার ৭১৬, বৃদ্ধির হার ৬৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
এসব শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, মানসম্মত শিক্ষার বড় একটি ধাপ হচ্ছে স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিগত দিনে স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। আগামীতেও স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
তিনি বলেন, এক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো শিক্ষক নিয়োগ দিত। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমরা এখন সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছি।