নিয়োগের অদ্ভূত শর্ত, মা হতে পারছেন না নারীরা
নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণরা প্রশিক্ষণ চলাকালে অন্তঃসত্ত্বা কিংবা তিন বছরের কম বয়সী সন্তান থাকা যাবে না। এমন অদ্ভুত শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) পদে নিয়োগের জন্য। ফলে নিয়োগপ্রত্যাশীদের মাতৃত্ব হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তিন বছর আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি দেয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হলেও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়নি। রোববার (৮ অক্টোবর) ফল ঘোষণার দাবিতে অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেন নিয়োগপ্রত্যাশীরা। সেখানে এমন শঙ্কার কথা জানান তারা। পরে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেন।
জানা গেছে, এ নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ফল প্রকাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নিয়োগপ্রত্যাশীরা জানান, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়নে ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। শর্ত দেওয়া হয় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের প্রশিক্ষণ চলাকালে গর্ভাবস্থা বা তিন বছরের কম বয়সের সন্তান থাকা যাবে না। এতে বিপদে পড়েছেন বিবাহিত নারীরা।
আরো পড়ুন: রাজধানীতে আরও ২৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন হচ্ছে
বিজ্ঞপ্তির তিন বছর পর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষা হয়। উত্তীর্ণ হয় ৭ হাজার ৬২১ জন। গত ১৮ জুন মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। দীর্ঘসূত্রতা ও ফলপ্রত্যাশীরা শুধু নারী হওয়ায় তাদের সংসারে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পরিবার পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটা, মা-বাবা হওয়া থেকে বিরত থাকছেন অনেকে।
৩২ বছর বয়সী সেলিনা জায়তুন ইতি জানান, তার সন্তান নেওয়া হয়নি। ইচ্ছা থাকলেও তিন বছরের বেশি নিয়োগ আটকে রাখায় সন্তান নিতে পারেননি। চাকরির আশায় পরিবার টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে গেছে। চাকরি হোক না হোক, ফল ঘোষণার দাবি তার।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এঅ্যান্ডআরএইচ মনজুর হোসেন বলেন, নিয়োগের এ শর্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা মানবাধিকার কমিশনের আইনের লঙ্ঘন। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভে সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ থাকার কথা। কেন এমন শর্ত দেওয়া হলো, তার জানা নেই।চূড়ান্ত ফল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে তদন্তের কারছে ফল আটকে আছে।