প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে নাজমুলের স্ট্যাটাস, কমেন্টে ছাত্রলীগের জন্য ‘৩৫ চাই’
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ফেসবুক লাইভে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানা। সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা সেই মুক্তার চাকরি হলো আইসিটি মন্ত্রণালয়ে। সোমবার (২৯ মে) প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বেতন ৩৫ হাজার টাকা।
বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকে এর পক্ষে নিলেও তীব্র বিরোধীতা করছেন বড় একটি অংশ। তবে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম প্রতিমন্ত্রী পলকের পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেটিরও অনেকে প্রশংসা করলেও ছাত্রলীগের একাংশ বিরোধীতা করেছেন। এমনকি ছাত্রলীগের কথা চিন্তা করে হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবি উঠেছে।
নাজমুল স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘পলক ভাই যে কাজটি করেছেন তা তিনি না করে অন্য সবার মতো পাশ কাটিয়ে গেলে তার কোন ক্ষতি হতো না, বরং সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পেতেন। আসলে একবার ভাবুন তো কাজটি কি তিনি খুব অন্যায় কোন কাজ করেছেন?
আমি যা নিজেও আসলে আগে জানতাম না সেটা হলো পলক ভাই অনেকের পাশে দাঁড়ান যা তিনি কখনও প্রচার করেন না। অনেক মন্ত্রী আছেন যারা পাশ কাটিয়ে চলেন। তিনি অন্তত হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলেন সবাইকে আপনি বলে সম্বোধন করেন। আর এজন্যই সবাই সহজেই আমরা তার সমালোচনা করে ফেলি।
আমার উপরেও হয়তো অনেকে চড়াও হবেন এই লেখার জন্য। যেটা সত্য সেটাই আমি লিখবো কেউ ভূল বুঝলে আমার কিছু করার নাই। গত দুই মাস আগেও শিবিরের হামলায় পা হারানো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদকে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে কৃত্তিম পা সংযোজন করে দিয়েছেন পলক ভাই জুনায়েদ আহামেদ পলক তারুণ্যের অলংকার সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তৃনমূল ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা এক ফিনিক্স পাখি। অযথা তার পেছনে না জেনে সমালোচনা না করে তাকে সঠিকভাবে সঠিক তথ্য পৌছান সমস্যার সমাধান হবে।’
এ স্ট্যাটাসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লক্ষণ চন্দ্র বর্মন মন্তব্য করেছেন, ‘ভাই, ছাত্রলীগের ছেলেদের কথা ভেবে হলেও চাকরির বয়স ৩৫ করা উচিত বলে মনে করি। ম্যাক্সিমাম কর্মিদের মনের কথা শুনে দেখেন, সবাই বলবে।
ছাত্রলীগ করা ছেলেটা যখন রাজপথে স্লোগান দেয়,মিটিং, মিছিলে সময় কাটায় তখন তার ব্যাচমেটরা টেবিলে বসে পড়ে। একটা সময় গিয়ে দেখা যায় ছেলেটা বেকার আর তার সেই সহপাঠীরা অফিসার হয়ে গেছে। তখন সেই ছাত্রলীগ কর্মীর হয়তো চাকরির বয়সও শেষের দিকে!
ব্যর্থতা হতাশায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রকম ছেলেগুলো কোনোভাবে জীবন বাচানোর তাগিদে নামমাত্র কিছু একটা করে চলার ব্যবস্থা করে। একটা সময় দলের প্রতি তাদের বিতৃষ্ণা চলে আসে। কন্ঠ দিয়ে আর জয় বাংলা স্লোগান বের হয় না।
ছাত্রলীগের ছেলেদের কথা ভেবে হলেও নেত্রীর ৩৫ বিষয়টি আরেকবার বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করি। যাতে অন্তত দলের ছেলেরা কিছুটা সময় পায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার।’ জানি এসব ভাবার টাইম নাই কারো, তারপরও আশেপাশে অনেকের করুন দশা দেখে আবেগে চলে আসে এসব কথা।’
চাঁদপুরের কচুয়ার সদর দক্ষিণ কচুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদ বায়জিদ লিখেছেন, ‘ছাত্রলীগের অসংখ্য ভুক্তভোগী-হতাশাগ্রস্থ মেধাবী তরুণ-তরুণী রয়েছে, যাদের খবর পলক সাহেব নয়, কোন সাহেবরাই রাখেন না। এ সরকারের আমলে ছাত্রলীগের চাকরি হয় না, হয় বিএনপি জামাত শিবিরের। কারণ তারা টাকা দিতে পারে, ছাত্রলীগের কর্মীরা তো আর টাকা দেবে না। সেজন্য নেতা থেকে পাতি নেতা সবার সুপারিশ সেই ছাত্রদল আর শিবিরদের পক্ষে।‘
আব্দুল্লাহ হেল মাসুদ সুইটের মন্তব্য, ‘ভাই আপনি যখন ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন তখন আমি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলাম,পরবর্তী জেলা কমিটির সহ-সভাপতি হই,বর্তমান থানা যুবলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক। কেউ চাকরি দেয়ওনি বয়স ও শেষ। দলের পেছনে জীবনের অর্ধেক সময় পার করে দিলাম। চাকরির বয়স ৩৫ জোর দাবি জানাই ভাই।’
এমডি শোয়াইব আহমেদ লিখেছেন, ‘ভাই হাজার হাজার ছাত্রলীগ ছেলে আছে তাদের থেকে একজনকে দিতে পারতো চাকরি। শুধুমাত্র শো আপ করার জন্য মেয়েটিকে চাকরি দিয়েছে।’
শেখ নাফিজ বিল্লাহ মঈন লিখেছেন, ‘যাই বলেন নাহ কেনো ভাই, এসব বলে লাভ নাই। অবহেলিত ছাত্রলীগের পাশে তো কেউ কখনো দাঁড়ায় না। আমার বরগুনার ভাইটির পাশে কোন কোন এমপি মন্ত্রী দাড়িয়েছে? অবহেলিত ছাত্রলীগ এই প্রশ্নের উত্তর চায়।’
শিবলী নোমানের মত, ‘ভাই। পলক ভাই যে কাজটি করেছে অনেক ভালো করেছে। কিন্তু যারা আমাদের দলের লোক হয়েও তার সমালচনা করছে, তারা মনে হয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নয়তো সুবিধাবাদী।’