২৯ মে ২০২৩, ১৫:২৪

সার্টিফিকেট পুড়িয়ে সরকারি চাকরি পেলেন সেই ইডেন ছাত্রী!

ইডেন ছাত্রীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক  © সংগৃহীত

সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ বছর বাড়ানোর দাবিতে ফেসবুকে এক লাইভে এসে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানা। তার সার্টিফিকেট এখন সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিতে কাজে লাগছে না জানিয়ে ২৭ বছরের অর্জিত সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছেন তিনি। নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা সেই মুক্তার এবার চাকরি হলো আইসিটি মন্ত্রণালয়ে। ইডেন ছাত্রীকে চাকরি দিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সোমবার (২৯ মে) প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ইমেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। তার বেতন ৩৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রতিবাদ ইডেন ছাত্রীর

চাকরি পেয়ে মুক্তা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সহানুভুতির কারণে আমার চাকরি হলো, আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। একজন প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক ভিডিও দেখে নাগরিকের ক্ষোভ-দুঃখ হতাশা দূর করতে তাকে খুঁজে এনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাকরির ব্যবস্থা করবেন; তা এখনও আমার কাছে সেটা বিস্ময়ের।’

এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘দেশের মেধাবী তরুণ-তরুণীরা যেন হতাশাগ্রস্ত না হয় এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যেতে পারে, সেজন্য আইসিটি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা দিচ্ছে।’

গত মঙ্গলবার (২৩ মে) ইডেন কলেজের সামনে মুক্তা তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে আসেন। সেশনজট ও করোনার  কারণে যাদের চাকরির আবেদনের সময় শেষ হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে তিনি এই প্রতিবাদ করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানার সার্টিফিকেট পোড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ডেকে পাঠান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। চাকরির বয়স বাড়ানোর আন্দোলন করেও মিলছে না কোনো সুখবর। তাই ক্ষোভে নিজের সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন মুক্তা। কষ্ট আর ক্ষোভের এ কথা শুনে মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।

সার্টিফিকেট পোড়ানোর সেই লাইভে দেখা যায়, তিনি তার মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতোকোত্তরের সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন। পুড়িয়ে ফেলার আগে তিনি দেখান, তার স্নাতক পরীক্ষা ২০১৩ সালে এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষা ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে তার পরীক্ষা হলেও ২০১৯ সালে তার সার্টিফিকেট ইস্যু হয়। ২০১৫ সালে পরীক্ষা দিয়েও তিনি ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৪ বছর কোথাও আবেদন করতে পারছেন না। 

আরও পড়ুন: সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রতিবাদ ইডেন ছাত্রীর

এদিকে চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী তার আবেদনের সময়ের ৪ বছর কাজে লাগাতে পারছেন না। লাইভে আক্ষেপের সুরে মুক্তা সুলতানা বলেন, যে সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায় না, বেসরকারি চাকরিতেও আবেদন করা যায় না সে সার্টিফিকেট রেখে কী লাভ। 

পরে মুক্তা গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের সুযোগ করে দেওয়া হোক, আপনি তো লাইভে দেখলেন সেখানে বলেছি, আমরা পাশ করলেও সেশনজটের কারণে আবেদনের বয়স ফুরিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সুযোগ দেওয়া হোক সেটাই চাই। তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর কোথাও এই বয়স সীমা নেই। শুধু বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে এই অবস্থা। ২৭ বছর পড়াশুনা করে যদি আবেদনই না করতে পারি তাহলে আমরা কী করতে পারি?