বিসিএসসহ সরকারি চাকরির প্রশ্নফাঁস করলে শাস্তি কী?
বিসিএস বা অন্য কোনো সরকারি চাকরির পরীক্ষার আগে সক্রিয় হয়ে ওঠে অপরাধী চক্র। তারা প্রশ্ন ফাঁস করে বা প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। অনেক চক্র পরীক্ষার আগেই ধরা পড়ে। অনেকে সফলও হয়। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের জেরে অনেক পরীক্ষা বাতিল বা স্থগিত হওয়ার নজিরও রয়েছে। এ ধরনের অপরাধ রোধে কঠোর আইন করেছে সরকার।
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে সরকার বিশেষ আইন পাস করেছে। আইন অনুযায়ী, এ ধরনের অপরাধে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান আছে। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৭ রহিতপূর্বক যুগোপযোগী করে পুনঃপ্রণয়নকল্পে প্রণীত আইনে এমন বিধান রয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি আইনটি পাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে এর জন্য প্রণীত প্রশ্নসংবলিত কাগজ বা তথ্য, মিথ্যা ধারণাদায়ক কোনো প্রশ্নসংবলিত কাগজ বা তথ্য অথবা পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে বলে বিবেচিত হওয়ার অভিপ্রায়ে প্রশ্নসংবলিত কাগজ বা তথ্য যেকোনো উপায়ে ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণ করলে অপরাধ হিসেবে ধরা হবে। এ জন্য অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অনেকে অবৈধ উপার্জন করার অপচেষ্টা করেন। অনেকে গুজব ছড়ান। এতে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। পরীক্ষার আগে কেন্দ্র ঠিক করা, পরীক্ষক নিয়োগ, প্রশ্নপত্র ছাপানোসহ নানা কার্যক্রম নেওয়া হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রমাণিত হলে পরীক্ষা আবার নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে।
এগুলো ঠেকাতে আইনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তাদের ভাষ্য, মেধাবীরা পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাবেন, এটিই নিয়ম। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বা গুজব ছড়িয়ে যেন ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে, সে ক্ষেত্রে আইনটি রক্ষাকবচ হবে।
পিএসসির একজন সদস্য বলেন, বিসিএস পরীক্ষার পাশাপাশি পিএসসি বিভিন্ন ধরনের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়। এ পরীক্ষায় মেধাবীদের অংশগ্রহণ ও চাকরি নিশ্চিত করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি ভয়ানক ব্যাধি। এ আইনের মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করল পিএসসি।