সাড়ে ৮২ হাজার শ্রমিক নেবে ইতালি, আবেদন শুরু
ইতালিতে বৈধপথে শ্রমিক আনার আবেদন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করা যাচ্ছে। আবেদন শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে জমা হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৩৩৫টি। যেখানে কিনা ৩৩টি দেশ থেকে ৮২ হাজার ৭০৫ জনকে বৈধভাবে ইতালিতে এসে কাজের সুযোগ দেওয়ায় কথা রয়েছে।
কি ধরনের কাজের জন্য লোক নেওয়া হবে ওই গেজেটে সেটির বিস্তারিত রয়েছে। সরকারি গেজেট অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ ৩৩ দেশের নাগরিকরা ইতালিতে ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। দ্য লোকাল।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কৃষি ও অস্থায়ী ক্যাটাগরিতে ৪৪ হাজার এবং স্থায়ী স্পন্সর ক্যাটাগরিতে ৩৮ হাজার ৭০৫ জন শ্রমিক নেয়া হবে। কৃষি, পরিবহণ, পর্যটন, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, মেকানিক্স ও উৎপাদনশীল খাতের জন্য স্থায়ী ও মৌসুমি কাজের ভিত্তিতে এই শ্রমিকদের নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, আর্টিস্ট, ব্যবসা শুরু করতে চাওয়া ব্যক্তিরাও ইতালির ভিসা নিতে পারবেন।
গ্রীষ্ম মৌসুমে ইতালিতে কৃষিকাজের জন্য প্রচুর শ্রমিক দরকার হয়। এ ছাড়া, পর্যটন এলাকায় হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য অনেক খাতে শ্রমিক প্রয়োজন হয়। সিজনাল ভিসার শ্রমিকরা সাধারণত এসব খাতে কাজ করেন। একটু বেশি পরিশ্রম করলে এখান থেকে প্রতি মাসে গড়ে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
এর আগে ২০০১ সালে ৩০ হাজার লোককে ওয়ার্ক পারমিট দেয় ইতালি। ২০২২ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৬৯ হাজার ৭০০ এবং ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৮২ হাজার ৭০৫ জন।
কারা শ্রমিক নিতে পারবে
ইতালির নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান দেশটির সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্ত মেনে প্রবাসী শ্রমিক নেওয়ার আবেদন করতে পারবে।
নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি
নিয়োগকারী বা মালিক নির্ধারিত SPID (Public Digital Identity System) ই-মেইল থেকে যাকে তিনি নিয়োগ করতে চান তার নাম, পাসপোর্ট ও অন্যান্য তথ্য উল্লেখ করে ইতালির স্থানীয় Prefettura (স্থানীয় প্রশাসনিক অফিসে) ছাড়পত্রের (Nulla Osta) জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নিয়োগদাতার বার্ষিক আয়-ব্যয়, কর, ক্রয় ভাউচার, শ্রমিকের থাকার জায়গাসহ বেশ কিছু বিষয় দেখে ইতালি সরকার। শ্রমিকের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পাসপোর্টের ফটোকপি এবং দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে দক্ষতার সনদ দরকার হয়।
আবেদন খরচ
প্রতি জন শ্রমিকের জন্য ১৬ ইউরো খরচ হয়। এর বাইরে কেউ যদি আবেদন ফরম পূরণ করতে হেল্প ডেস্কের সাহায্য নেন, এর জন্য আরও ১০০ থেকে ১৫০ ইউরো খরচ হতে পারে।
বাংলাদেশের কোটা কত
বিগত বছরে দেশ প্রতি নির্দিষ্ট কোটা বেঁধে দেওয়া হলেও এ বছর তা করা হয়নি। অর্থাৎ কোন দেশ থেকে কত শ্রমিক ইতালিতে যেতে পারবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।
তবে, এ বছর আবেদন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন একটা শর্ত দেওয়া হয়েছে। সেটি হলো, নিয়োগদাতাকে প্রথমে শ্রমিকের চাহিদা জানিয়ে কর্মসংস্থান দপ্তরে আবেদন করতে হবে। তারা শ্রমিক সরবরাহ করতে অপারগ হলে একটা সনদ দেবে, যার ভিত্তিতে বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার আবেদন করা যাবে।
আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে জনপ্রশাসন অফিস থেকে নুল্লা ওয়াস্তা বা ভিসার অনুমোদনপত্র দেওয়া হবে। এটি নিজ দেশের ইতালিয় দূতাবাসে জমা দিয়ে ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। অনলাইনে করা আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভিসার অনুমোদনপত্র আসতে প্রায় ৬ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।