দ্বিতীয় দিনেও পিএসসি গেটে চলছে চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান
দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন ৪০তম বিসিএস নন ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) গেটে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, বিসিএস পরীক্ষায় ক্যাডারদের পদ বরাদ্দের পর মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নন ক্যাডারে চাকরির জন্য সুপারিশ করা হতো। কিন্তু সরকারি কর্ম কমিশনের নতুন নিয়মের ফলে নতুন প্রায় ৮ হাজার চাকরি প্রত্যাশী বঞ্চিত হবেন।
এ সময় তারা অভিযোগ করেন, এদিন সকালের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। তবে তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
এর আগে গতকাল রোববার সকালে ৬ দফা দাবি আদায়ে ৪০তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার সুপারিশ প্রত্যাশী ও চাকরিপ্রার্থী বেকার ছাত্রসমাজের প্রায় দেড় হাজার জন পিএসসির তিনটি গেটেই অবস্থান নেয়। এসময় তারা সেখানে দেশাত্মবোধক গান আর স্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা মুখর করে রাখেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দাবি আদায়ের ভাষা আরও জোড়ালো হয়।
আরও পড়ুন: পিএসসি গেটে পুলিশ, চাকরিপ্রার্থীরা আশপাশে
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, আন্দোলন চলাকালীন বিকাল ৪ টার পর পিএসসির গেটগুলোতে অবস্থান নেওয়া প্রার্থীদের পুলিশ জোরপূর্বক সরিয়ে দেয়। পিএসসি কর্মকর্তারা পুলিশি পাহারায় একে একে বের হয়ে যান।
পরবর্তী সন্ধ্যায় চাকরিপ্রার্থীরা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে প্রতিবাদ জানায়। তারা রাতভর সেখানে অবস্থান করতে চাইলেও পুলিশি বাধায় সেটি সম্ভব হয়ে ওঠেনি। দাবি আদায়ে সোমবার সকাল ৯টা থেকে পিএসসির গেটগুলোতে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করবেন তারা।
প্রার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো, যেহেতু বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, সেহেতু বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির পর ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদসংখ্যা নির্ধারণের এই বেকারবিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডারের পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করাতে হবে।
যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি ২৯ মার্চ ২০২২ তারিখ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমান উদ্বুদ্ধ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষিত ও মেধাবী ছাত্রসমাজকে পিএসসির মূল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে’ এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করে বেকারবান্ধব নীতি নবায়ন করতে হবে এবং বিগত এক যুগে পিএসসি যে স্বপ্ন, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।