চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে ফের জনসমাবেশ
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীতকরণ ও বৈষম্যমূলক ব্যাকডেট পদ্ধতির প্রতিবাদে ফের জনসমাবেশ করেছে চাকরি প্রত্যাশী যুব প্রজন্ম।
শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুর ৩ টায় রাজধানীর শাহবাগে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জনসমাবেশ প্রায় ৫০০ এর অধিক চাকরি প্রত্যাশী অংশগ্রহণ করেন। সেসময় চাকরি প্রত্যাশীদের দুটি মিছিল এসে সমাবেশের সাথে একাত্মতা পোষণ করে। সমাবেশের আশেপাশের প্রায় শতাধিক পুলিশ অবস্থান করছিলেন।
সমাবেশে চাকরি প্রত্যাশীরা ‘‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই, ৩০ এর গন্ডি ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’’ বলে স্লোগান দেন।
জনসমাবেশের বক্তারা বলেন, এখানে সমাবেশের অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন জন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছে। কেউ এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বা কেউ এসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে সারা বাংলাদেশে ৩০ এর উর্ধ্বে ৫ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে।
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি নির্বাচনী ইশতেহারের সময় চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত চার বছর অতিক্রম হয়েছে। তবুও কেন সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আপনাদের কথার কোনো দাম নেই? যত দ্রুত সম্ভব ৩৫ এর দাবি বাস্তবায়ন করুন। আমরা ছাত্রসমাজ যদি মাঠে নামি তাহলে পালানোর পথ পাবেন না। আপনারা যদি গুলি করেন তাহলে করতে পারেন। আপনারা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েও যদি চাকরিতে আবেদনের বসয়সীমা বাস্তবায়ন না করেন, তাহলে ছাত্রসমাজ আগামী নির্বাচনে সেটার প্রতিফলন দেখিয়ে দেবে।
সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ২৫/২৬ বছর পড়াশোনা করে যে সার্টিফিকেটটা অর্জন করেছি। সেটা এখন করোনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটের কারণে কাজে লাগাতে পারছি না। আমাদের প্রত্যাশা ছিল চাকরিতে জয়েন করে পরিবারের হাল ধরা। কিন্তু আমরা এখন নিজেদেরই অধিকার পাচ্ছি না। সেখানে পরিবারের হাল ধরব কী?
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের ছাত্রসমাজকে আজ পড়ার টেবিল ছেড়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে। আজ যদি আমরা আমাদের দাবি নিয়ে ফিরতে না পারি, তাহলে পিতামাতাকে কী বলবো। আজ আমি আমার পরিবারকে সাপোর্ট দিতে পারছি না। এটা আমার ব্যর্থতা নয়। এটা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। প্রধানমন্ত্রীর শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্ত বহমান। আমরা আশা রাখছি আমাদের দুঃখের বিষয়গুলো জেনে অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়ন করবেন। প্রধানমন্ত্রী আমরা আমাদের দুঃখগুলো কী আপনি শুনছেন না? আমরা কী এদেশের নাগরিক না।
সমাবেশে বক্তারা বারবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে হাত জোর করছি। আমাদের কষ্টগুলো দেখুন। আমাদের পরিবারের কষ্টগুলো দেখুন। আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী আপনি মাদার অফ হিউম্যানিটি। আপনি আমাদের সাথে একটু মানবিকতা দেখান।
প্রসঙ্গত, ব্যাকডেট পদ্ধতি বলতে করোনা পরিস্থিতিতে যাদের আবেদনের বয়সসীমা শেষ হয়েছিল, তাদেরকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হয়েছে।