পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা
মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা যথাসময়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিবছরের মতো গ্রন্থমেলা উপলক্ষে নানা কর্মসূচির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে বইমেলায় ক্রেতা ও পাঠকরা আসতে পারেন সেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এবারের মেলায়।
২০২২ সালের গ্রন্থমেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
বই মেলার সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল উদ্দিন আহমদ বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস অতিমারির পাশাপাশি ওমিক্রনের আক্রমণের কারণে যাতে বইমেলা বন্ধ ঘোষণা না করতে হয় সেজন্য সবধরনের আগাম প্রস্তুতি রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রন্থমেলা নিয়ে গ্রন্থপ্রেমী মানুষের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। এছাড়া কোভিড-১৯ এর কারণে মানুষ বাসায় ঘরবন্দি থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছে। তারা সুযোগ পেলেই বাইরে আসছে। সুতরাং বইমেলা,শুরু হলে জনসাধারণের প্রাণের স্পন্দন ও পদচারণায় মুখর হবে বইমেলা প্রাঙ্গণ। বাংলা একাডেমিও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে বইমেলায় ক্রেতা ও পাঠকরা আসতে পারেন সেই প্রস্তুতি গ্রহন করছে। গত বছর বইমেলায় ৪৬০টি প্রকাশনী সংস্থা অংশগ্রহণ করেছিল, তারা এবারও বইমেলায় অংশ নিবেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশকরা কিস্তিতে স্টলের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। এবারই প্রথমবারের মতো তাদের এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এরআগে প্রকাশকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হলেও এবছর প্রকাশনী সংস্থার প্রকাশকরা যাতে কিস্তিতে ভাড়া পরিশোধ করতে পারেন সে বিষয়ে প্রথমবারের মতো তাদেরকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে বলে জানান জালাল উদ্দিন। এছাড়া ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টল ভাড়া পরিশোধের সময়সীমাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত বছর নভেম্বরের শেষে প্রকাশকরা স্টলের জন্য টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু এবার সময় বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকাশকদের সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ওসমান গণি জানান, প্রতিবছর বইমেলার জন্য নানা ধরনের প্রস্তুতি থাকে। এবারও তা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে গতবছর বইমেলা সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়নি। প্রকাশকরা সারা বছর নানা ধরনের বই প্রকাশ করে থাকেন। কিন্তু আশানুরূপ বই বিক্রি হয় না। ফলে বিক্রেতাদের মধ্যেও হতাশা কাজ করছে। এবারে প্রকাশকদের জন্য সরকারিভাবে কোন প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কয়েক দফা বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
ওসমান গণি বলেন, আমরা মনে করি বইমেলা নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা দরকার। যে একুশে বইমেলা সারাবিশ্বে আমাদের সুনাম এনে দিয়েছে, সেটা নিয়ে আমাদের ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায় না। আমি মনে করি বইমেলার জন্য বছরব্যাপী নানা পরিকল্পনা থাকা দরকার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বইসংক্রান্ত আন্তরিকতা কাছ থেকে দেখেছি। তার ১৫টি বই প্রকাশ করেছি, তার সহযোগিতা যদি পাওয়া যায় তাহলে প্রকাশকসহ সবাই নানা সহযোগিতা পাবেন। সম্মিলিত পরিকল্পনার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।