বইমেলা করতে পেরেছি, এটাই বড় প্রাপ্তি: মহাপরিচালক
গত ১২ এপ্রিল (সোমবার) এবারের বইমেলা শেষ হয়েছে। করোনাভাইরাসের মধ্যে এবারের বইমেলা আয়োজন অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি মেলা আয়োজনকে ঘিরে করোনা আক্রান্ত হয়ে কর্তা ব্যক্তিদেরও প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। তবুও এই করোনার মধ্যে বইমেলা আয়োজনের সক্ষমতাকে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে উল্লেখ করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, আমরা শুরু থেকেই ভার্চুয়াল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রকাশকরা বললেন মাঠে মেলা হলে তাদের কিছু আয় হবে। করোনা কমে আসায় আমরা মার্চ-এপ্রিল মিলিয়ে করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনা বেড়ে যাওয়ায় ঠিকমতো করা যায়নি। মেলার সাথে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যোগ করেছিলাম।
তিনি বলেন, এতে লোকসানের দিক হলো এই মেলা চালাতে গিয়ে আমার অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন করোনায় আক্রান্ত। আমাদের সভাপতিও (শামসুজ্জামান খান) বই মেলার কারণে নিয়মিত অফিস করতেন। তিনিও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। আমাদের আরেক সহকর্মী আবু জাফরও করোনায় মারা গেছেন।
করোনার মধ্যে বইমেলা আয়োজনের সক্ষমতাকে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। প্রকাশকরাও লাভবান হতে পারেননি। আমরা স্টলের ভাড়ায় শতকরা ৫০ ভাগ ভর্তুকি দিয়েছি। তারপরও আমরা এই করোনার মধ্যে বই মেলা করতে পেরেছি- এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে শুরু হলেও এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে সময় পরিবর্তন করে গত ১৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি ছিল বইমেলার ৩৭তম আয়োজন। এবারের মেলা উৎসর্গ করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি। মেলার মূল ভাবনা ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।
পরে গত ১২ এপ্রিল (সোমবার) অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের আসরের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এ বছর মেলায় প্রকাশিত সর্বমোট নতুন বইয়ের সংখ্যা ছিল ২৬৪০টি। এ বছর মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। তাদেরকে ‘শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়েছে।