বইয়ের সমাদর কিছুমাত্র কমেনি: ড. আনিসুজ্জামান
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, ই-বুক মুদ্রিত বইকে বাজার থেকে উৎখাত করবে এরকম মনে করার কোনো কারণ নেই। বইয়ের সমাদর কিছুমাত্র কমেনি।
শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে রাজধানীর মহাখালীর রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) হেলমেট মিলনায়তনে এক বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এ কথা বলেন। রাওয়া বইমেলা-২০১৯ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘প্রযুক্তির অবিশ্বাস্য উন্নতিতে অনেকে মনে করছেন, মুদ্রিত বইপত্রের ভবিষ্যৎ বোধহয় ভালো না। কিন্তু, আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে, ই-বুক প্রভৃতি যান্ত্রিক বইপত্র ছড়িয়ে পড়লেও মুদ্রিত গ্রন্থের প্রতি আকর্ষণ বেশি কমেনি।’
মুদ্রিত বই কেন টিকে থাকবে—এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বইমেলার আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। এ গ্রন্থমেলার পরিসর প্রতিবছর বাড়ছে। বাড়ছে বই বিক্রির পরিমাণ, প্রকাশকের সংখ্যাও। প্রকাশকেরা পাবলিক লাইব্রেরিতে নানাসময়ে এককভাবে বইমেলা করছে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে নানা বইমেলা আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বইমেলার অন্যতম দিক হওয়া উচিত পরবর্তী প্রজন্মের আগ্রহ। কেননা, তরুণেরা ক্রমশ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বই থেকে। তিনি বলেন, ‘আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে ফোন নামক যন্ত্রের ভেতরে যাবতীয় কিছু গেঁথে দেওয়া হয়েছে। এতে কী নেই? সবই আছে। বইও বিভিন্ন মাধ্যমে ফোনের মধ্য দিয়ে পাঠ করি। কিন্তু কালো হরফে সাদা কাগজে যে দেহটি ফুটে ওঠে, তার মায়া অন্যরকম। তার ঘ্রাণ, অনুভব অন্যরকম।’
অনুষ্ঠান থেকে বলা হয়, রাওয়া ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছরের মে মাসে বইমেলা করে থাকে। এ বছর ষষ্ঠ আয়োজনটি করা হয়েছে অক্টোবর মাসে।
রাওয়া বইমেলায় ১০টি প্রকাশনীসহ ৫০টি স্টল আছে। এর মধ্যে ৪০টি স্টলে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের লেখা বই প্রদর্শনী ও বিক্রি চলছে। বইমেলা চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত। আজ প্রথম দিনে চারটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে রাওয়া চেয়ারম্যান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) খন্দকার নুরুল আফসারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দ্য ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) আবু জাফর চৌধুরী প্রমুখ।