১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৯

বইমেলায় আক্রমণের প্রতিবাদ জানালেন ১২৪ লেখক-শিল্পী-অধিকারকর্মী

বইমেলায় আক্রমণের প্রতিবাদ জানালেন ১২৪ লেখক-শিল্পী-অধিকারকর্মী
বইমেলায় হামলা ও স্টল বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ১২৪ লেখক-শিল্পী-অধিকারকর্মী  © সংগৃহীত

বইমেলায় হামলা ও বাধার ঘটনাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং ধারাবাহিক সহিংসতার অংশ। বইমেলায় যে আক্রমণ হয়েছে, তা মতপ্রকাশের ওপর আঘাত। দেশের ১২৪ জন লেখক-শিল্পী-অধিকারকর্মী এক বিবৃতিতে এ কথা উল্লেখ করে মেলার নিরাপত্তা জোরদার করা ও আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে ওই বিবৃতি পাঠানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফেসবুকে আগাম হুমকি দিয়ে সোমবার সব্যসাচী স্টলে হামলা চালানো হয়েছে। এই মব (দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) আক্রমণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর আঘাত। এই মবগোষ্ঠী দেশের জনগণের মৌলিক মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরোধী।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আক্রমণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ২০০৪ সালে লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর নৃশংস হামলা, ২০১৫ সালে লেখক অভিজিৎ রায় এবং প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ড থেকে সম্প্রতি মাজার ভাঙা, নারীদের ফুটবল খেলতে বাধা দেওয়া, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সময় বেঁধে দেওয়া একই ধরনের সহিংসতার ধারাবাহিকতার অংশ। বিশেষত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ভিন্ন চিন্তা ও বৈশিষ্ট্যের মানুষদের হত্যার ক্ষেত্রে প্রথমে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর প্রচারণা ও সম্মতি উৎপাদন; পরবর্তী সময়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও পরোক্ষ মদদে এসব হত্যার ঘটনা ঘটেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়েও একইভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন হতে দেখা যাচ্ছে।

বইমেলার বর্তমান নিরাপত্তাব্যবস্থা সম্পূর্ণ অকার্যকর উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তাব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে বহুগুণ জোরদার করতে হবে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সব হামলাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। এ ধরনের কার্যকলাপ প্রতিরোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। এই ন্যূনতম দাবিগুলোও পূরণ না হলে বাংলা একাডেমির বর্তমান মহাপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই ব্যর্থতার দায় নিতে হবে।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, নৃবিজ্ঞানী নাসরিন খন্দকার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম সারওয়ার, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের শিক্ষক লাবনী আশরাফি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসউদ ইমরান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ, লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা, আইনজীবী মানজুর আল মতিন, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশীদ প্রমুখ।