বইমেলার আনুষ্ঠানিক পর্দা নামছে আজ
আজ আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা নামছে বাঙালির প্রাণের মেলবন্ধন অমর একুশে বইমেলা। কভিড পরবর্তী সকল সংকট ও সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে তিন বছর পর এ বছর লেখক পাঠকের মেলবন্ধনের এ আসর শুরু হয় ভাষার মাসের শুরুর দিন; শেষও হচ্ছে নিয়ম করেই। এ বছর নানা কারণে ও ঘটনায় আলোচনায় ছিল বইমেলা।
এবারের মেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে বিতর্কিত বই ছাপানোর দায়ে স্টল বরাদ্দ না দেওয়া; তা নিয়ে আদালতের আদেশ এবং বিশিষ্টজনদের প্রতিক্রিয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল বাংলা একাডেমির ভূমিকা নিয়ে। বাংলা একাডেমি ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’, লেখক জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ এবং লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা’ বই নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আদর্শকে স্টল বরাদ্দ দেয়নি। এছাড়া, বেশ কিছু লেখকের বই মেলায় নিষিদ্ধ এবং শেষদিকে এসে বোমা হামলার হুমকি কিছুটা নিষ্প্রভ করে বইমেলার চলতি আসরকে।
বিগত সময়ে মহামারির কারণে সংক্ষিপ্ত পরিসরের অমর একুশে বইমেলা এবারের মাসব্যাপী আসরে কিছুটা প্রাণের সঞ্চার করতে পেরেছে পাঠকদের কাছে। পাঠক, দর্শক ও প্রকাশকদের আনাগোনায় আবারও মুখরিত চেনা রূপ পায় এবারের বইমেলা।
প্রতিবারের মতো এবারেও সমাপনী অনুষ্ঠানে গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। গতবছর (২০২২) প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনী-কে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হবে। একই বছর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে আহমদ রফিক রচিত বিচ্ছিন্ন ভাবনা প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুক্স, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ রচিত বাংলা ‘একাডেমি আমার বাংলা একাডেমি’ বইয়ের জন্য ঐতিহ্য এবং হাবিবুর রহমান রচিত ‘ঠার: বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হবে।
২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খি-কে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হবে।
২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুঁথিনিলয় (প্যাভিলিয়ন), নবান্ন প্রকাশনী (২-৪ ইউনিট), উড়কি (১ ইউনিট) -কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হবে।
অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিকেল ৫ টায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৩’-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব মো আবুল মনসুর। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২, কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ এবং অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষে বিভিন্ন গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হবে।