২৩ এপ্রিল ২০২১, ২১:১৭

বই পড়ার সংস্কৃতি সংকুচিত হয়েছে: শিক্ষা উপমন্ত্রী

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল  © ফাইল ফটো

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আমাদের বই পড়ার সংস্কৃতি সংকুচিত হয়েছে।  ডিজিটাল বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ই-বুক সংস্কৃতি অব্যাহত রাখতে হবে। সরাসরি কাগজের বই বা ই-বুকের মাধ্যমে বই পড়ার অভ্যাস অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা জার্নাল পড়তাম কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে। তবে কাগজের বই পড়ে যে চিন্তার গভীরতায়  সহজে পৌঁছে যেতে পারি, তা অন্য মাধ্যমে কঠিন।

আজ শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকালে ‘বিশ্ব বই দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বই পড়ার আমাদের যে মৌলিকতা হারিয়ে যাচ্ছে, তা রক্ষা করতে আমাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের দায়িত্ব নিতে হবে।  বই পড়ার ক্ষেত্রে আমাদের বড় উদাহরণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ কারা জীবনে বিভিন্ন বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছিলেন। তার  প্রতিফলন বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় দেখেছি। 

“বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত জীবনের অভ্যাসগুলো তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মুষ্টিমেয় কিছু রাজনীতিবিদ ছাড়া আমরা কারও মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না।  আমাদের যারা কর্মী রয়েছেন, দলের তরুণ যারা রয়েছেন, তাদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সবাই মিলে বসে আড্ডা দেওয়ার চেয়ে, অনর্থক আরেক জন রাজনৈতিক ব্যক্তির সমালোচনা বা অভিযোগ করার চেয়ে, যেকোনও একটি বই পড়ি, তাহলে নিজের জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারবো, নিজের জীবনকে উন্নত করতে পারবো।  নিজের কর্ম সংস্থান ও ব্যক্তি জীবনেও এটি কাজে লাগবে।”

ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ তরুণ রাজনীতিকদের বই পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বলতে চাই. আমাদের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। নীতি নির্ধারণী জাগয়গায় আমরা অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি, চেষ্টা করছি, চেষ্টা করে যাবো।

“আমি রাজনৈতিক নেতাদের আহবান জানাবো— ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বই তুলে দেই।  কিন্তু তাদের প্রশ্ন করতে হবে— আমার দেখা নয়া চীনে বঙ্গবন্ধু কী বলেছিলেন? নারী-পুরুষের সমতার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কী বলেছিলেন? আমরা দেখছি, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন আমরা ধারণ করতে পারছি না, বা পারি না। কারণ, আমরা তা পড়ে অনুধাবন করছি না।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কে এম খালিদ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশের ট্রাস্টি ও সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান শেফালী, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গাজী হাসান কামাল প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদের সভাপতি মো. ইমাম হোসাইন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করা হয়। বই দিবসের এবারের মূল প্রতিপাদ্য হলো— বই পড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো।