প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ১৫০ কোটি টাকা বই ক্রয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ

  © লোগো

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫০ কোটি টাকার বই ক্রয় কর‍ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকার অভিযোগ এনে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট লেখক। আজ বুধবার (২৪ জুন) বিবৃতি প্রদানকারী লেখকদের পক্ষে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী লেখকদের মধ্যে রয়েছেন- হাসান আজিজুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, মুনতাসীর মামুন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবুল মোমেন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সুব্রত বড়ুয়া, মোরশেদ শফিউল হাসান, অসীম সাহা, আবুল আহসান চৌধুরী, ফরিদুর রেজা সাগর, ইমদাদুল হক মিলন, আমীরুল ইসলাম এবং আনিসুল হক।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকার বই ক্রয়ের এ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় এতো বিশাল অংকের বই ক্রয় করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বচ্ছতা পছন্দ করেন। কিন্তু বই ক্রয়ের এই ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বই ক্রয়ের পদ্ধতি নির্ধারণের এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের কিন্তু স্বচ্ছতা থাকা বাঞ্ছনীয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনাকালে সৃজনশীল প্রকাশকরা দুরবস্থার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন। এ সময় বই ক্রয়ের এই সংবাদ লেখক, প্রকাশক সবার জন্য আর্শীবাদস্বরূপ। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন লেখক-প্রকাশক এর সুফল ভোগ করবে আর দেশের বৃহৎ সংখ্যক লেখক-প্রকাশক সরকার প্রদত্ত এই সুফল থেকে বঞ্চিত হবে এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। এই ধরনের অস্বচ্ছ কাজ সমর্থনযোগ্য নয়। বাংলাদেশের অনেক লেখক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বই লিখেছেন। বই ক্রয়ের পূর্বে এইসব বই নির্বচন প্রক্রিয়ায় আনা আবশ্যক।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা জানতে পেরেছি বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি থেকে এই বই ক্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত করে সকল প্রকাশককে বইয়ের তালিকা জমা দেওয়ার সুযোগ দিয়ে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বই নির্বাচন করে দ্রুত বই ক্রয় করার জন্য পত্র দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রেরিত চিঠির কপি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পিএস বরাবর মেইল করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পরও উক্ত চিঠির কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে সমিতি থেকে উক্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর আরও একটি পত্র প্রেরণ করা হয়ে হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বিবৃতিতে লেখকরা বলেন, আমরা মনে করি, অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের জন্য প্রতি বছর যে পদ্ধতিতে বই ক্রয় করে সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হোক। অর্থৎ সৃজনশীল প্রকাশকদের নিকট উপযুক্ত বইয়ের তালিকা ও নমুনা কপি জমা নেয়া হোক। এবং দেশের বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী, প্রকাশক সমিতির প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সমন্বয়ে বই নির্বাচন কমিটি গঠন করে নির্বাচন সম্পন্ন করে বই ক্রয় করা আবশ্যক। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে করোনাকালীন দুঃসময়ে কোনো ধরনের অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা আমাদের কাম্য নয়।


সর্বশেষ সংবাদ