পাবলিক লাইব্রেরি ক্যাম্পেইন
সারাদেশে ৫ লাখ নতুন লাইব্রেরি ইউজার সৃষ্টি হবে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০১৯, ০৯:১১ PM , আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯, ০৯:১১ PM
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হলো ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেড প্রকল্প ও গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এক বছরব্যাপী ‘চলো গ্রন্থাগারে চলো-দেখি সম্ভাবনার আলো’ শীর্ষক পাবলিক লাইব্রেরি ক্যাম্পেইনের। মঙ্গলবার রাজধানীর সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের কনফারেন্স কক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার এ ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যাম। সভাপতিত্ব করেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের পরিচালক এ. জে. এম আবদুল্ল্যাহেল বাকী। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেড প্রকল্পের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কার্স্টি ক্রফোর্ড এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
এই ক্যাম্পেইনটি ঢাকাসহ বাংলাদেশের মোট ২৫টি জেলায় বাস্তবায়িত হবে। জেলাসমূহ হলো-ঢাকা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, জামালপুর, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, কক্সবাজার, ফরিদপুর, রাঙ্গামাটি, গোপালগঞ্জ, বান্দরবন, টাঙ্গাইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, রাজশাহী, যশোর, পাবনা, খুলনা, রংপুর, কুষ্টিয়া, নীলফামারী, সিলেট, নারায়নগঞ্জ এবং দিনাজপুর। এই ক্যাম্পেইনের ফলে সরকারি গণগ্রন্থাগারসমূহে আগামী এক বছরে আরো প্রায় ৫ লক্ষ নতুন গ্রন্থাগার ব্যবহারকারীর সৃষ্টি হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশীষ কুমার সরকার বলেন ‘চলো গ্রন্থাগারে চলো দেখি সম্ভাবনার আলো’ ক্যাম্পেইনটি সবাইকে আহবান জানাবে সরকারি গ্রণগ্রন্থাগার ব্যবহারের। সেই সাথে অবহিত করবে সরকারি গণগ্রন্থাগরের নতুন নতুন সেবা যেমন, গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য বিনামূল্যে ওয়াইফাই ইন্টারনেটসহ কম্পিউটার, শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার কোডিং এবং প্রোগ্রামিং শেখার ব্যবস্থা এবং শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য টয়ব্রিক সামগ্রী। সরকারি গণগ্রন্থাগার সমূহ এইসব নতুন সেবা চালু করায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেড প্রকল্পকে ধন্যবাদ জানান আশীষ কুমার সরকার।
তিনি আরো বলেন, ২০১৭-২০১৮ সালে প্রায় ৫৮.৫০ লক্ষ মানুষ সরকারি গণগ্রন্থাগার ব্যবহার করেছেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেড প্রকল্পের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জনাব কার্স্টি ক্রফোর্ড বলেন গণগ্রন্থাগার খাতের উন্নয়নে সরকারের সাথে কাধেঁ কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি আমরা। আমরা ৬৪টি জেলার সরকারি গণগ্রন্থাগারসমূহে গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য ওয়াইফাই ইন্টারনেট চালু করছি। আমরা ইতোমধ্যে গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য প্রায় একশো কম্পিউটার বিতরণ করেছি। ২৫টি জেলায় এই ক্যাম্পেইনের নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারি গণগ্রন্থাগারের এইসব নতুন সেবার চাহিদা তৈরি করা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে লাইব্রেরিমুখী করার চেষ্টা করা হবে।
বারবারা উইকহ্যাম বলেন, বিশ্বের ১১৫ এর চেয়েও বেশী দেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রম চালু আছে। তিনি আরো বলেন, আমরা একটি উন্মুক্ত, অংশগ্রহণমূলক এবং সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের জন্য সরকার এবং সুশীল সমাজের সাথে সমন্ময় করে থাকি। আমরা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন, সুযোগ সৃষ্টি এবং নেতৃত্ব বিকাশের জন্য কাজ করছি। আমাদের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেড প্রকল্পের মাধ্যমে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের সহায়তায় বাংলাদেশের লাইব্রেরি খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছি। আমাদের এই পাবলিক লাইব্রেরি ক্যাম্পেইন সেই উদ্যোগেরই একটি অংশ, যার মাধ্যমে সরকারি গণগ্রন্থাগারসমূহের বিভিন্ন নতুন সেবা সম্পর্কে প্রচারণার মাধ্যমে আমরা মাত্র এক বছরে অসংখ্য নতুন পাঠক পাবো বলে বিশ্বাস করি। আমি সবাইকে এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করার জন্য উন্মুক্ত আহবান জানাচ্ছি।
‘চলো গ্রন্থাগারে চলো দেখি সম্ভাবনার আলো’ ক্যাম্পেইনের জনসংযোগ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেড প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন্স স্পেশালিস্ট জনাব জিনাত আরা আফরোজ বলেন, ২৫টি জেলার মানুষের সাাথে জনসংযোগের উপায় হিসেবে আমরা তৈরি করেছি ক্যাম্পেইনের বিশেষ নেমনিকটি। যেখানে আপনারা দেখতে পাবেন সূর্য্যরে আলোয় আলোকজ্জল পটভূমিতে আনন্দিত এবং শান্তিময় পরিবেশে গ্রন্থাগারে নারী এবং পুরুষ গ্রন্থাগার ব্যবহারকারীদের। যারা সবাইকে বছরজুড়ে গ্রন্থাগারে আসতে আহবান জানাবেন, সেই সাথে সচেতন করবেন সরকারি গণগ্রন্থাগারের বিভিন্ন নতুন সেবা সম্পর্কে। আমাদের সংক্ষিপ্ত ভিডিও চিত্রটি পাঠক এবং সম্ভাব্য পাঠকদের গ্রন্থাগার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করবে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক জনসংযোগ চালানো হবে। পাবলিক লাইব্রেরি ক্যাম্পইনের নির্ধারিত ফেসবুক পেইজ facebook/publiclibrarycampaign এ পাওয়া যাবে ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত সব তথ্য।
সভাপতির বক্তব্যে এ. জে. এম আবদুল্ল্যাহেল বাকী বলেন, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নির্ধারিত ২৫টি গণগ্রন্থাগারের কর্মকর্তাদের এই পাবলিক লাইব্রেরি ক্যাম্পেইনটি বাস্তবায়ন করতে ব্রিটিশ কাউন্সিলকে সহযোগীতা করার জন্য দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ক্যাম্পেইনের সার্বিক সফলতা কামনা করে তিনি বলেন সরকারি গণগ্রন্থাগারভিত্তিক জনসংযোগ বৃদ্ধি এবং গ্রন্থাগারে পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে ‘চলো গ্রন্থাগারে চলো দেখি সম্ভাবনার আলো’ ক্যাম্পেইনটি।