নতুন বই, নতুন আশা
নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে গণভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। যদিও সারাদেশে উৎসব উদযাপন করা হবে পহেলা জানুয়ারি।
উৎসবের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নতুন বছরের শুরুতে ছেলেমেয়েদের হাতে বই মানে তাদের আলাদা একটি অনুভূতি। নতুন বই, নতুন ক্লাস। এ সময় নিজের ছোটবেলায় নতুন বই পাওয়ার অনুভূতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শিশুদের কাছে নতুন বই মানে পড়াশোনায় উৎসাহ ও উদ্দীপনা।
তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘ ২০৩০ সালের মধ্যে যে স্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নির্ধারণ করেছে এর যেসব ধারাগুলো আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য সেগুলি ইতোমধ্যে আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এমডিজি’র মত আমরা এসডিজি সফলভাবে বাস্তবয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। সেই সাথে আমাদের একটা লক্ষ্য রয়েছে যে, বাংলাদেশ যেন আরো উন্নত সমৃদ্ধ হয়। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে যেমন সুনির্দিষ্ট করেছি তেমনি নদী মাতৃক বাংলাদেশে আরো সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের অংশ হিসেবে ডেল্টা প্লান-২১০০ প্রণয়ন এবং পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। ‘অর্থাৎ একশ বছর পরেও বাংলাদেশ কেমন হবে সে পরিকল্পনাও আমরা জাতিকে দিয়েছি। কারণ আমি মনে করি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকলেই তবে আমরা আমাদের অর্জনগুলো আরো দ্রত উন্নতিতে করতে পারবো’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ট্রাষ্ট ফান্ড গঠন করে বৃত্তি দিচ্ছি। যেন দরিদ্র মেধাবীরা কোনভাবে বঞ্চিত না হয় এবং তারাও শিক্ষাটা নিতে পারে। এজন্য শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি। এ সময় তিনি কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাষ্টার্স সমমান প্রদানের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত করাতে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, যারা শিক্ষা গ্রহণ করছে এর মাধ্যমে তাদের জন্য জীবন-জীবিকা এবং সেইসাথে আধুৃনিক প্রযুক্তি শিক্ষাটা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের লক্ষ্য। এতে তারা জীবনটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার সুযোগ পাবে।
প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়তে এবং শিক্ষিত জাতি গঠনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক এবং বাধ্যতামূলক করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’ এভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ও যাবে বলে নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের দোয়া ও শুভকামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।