ঢাবিতে তিন দিনব্যাপী নন-ফিকশন বইমেলা শুরু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী নন-ফিকশন বইমেলা-২০১৮। রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ প্রাঙ্গণে এ বইমেলার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিন দিনব্যাপী এ নন-ফিকশন বইমেলা শেষ হবে আগামী মঙ্গলবার।
বণিক বার্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ যৌথভাবে চতুর্থবারের মতো বইমেলাটির আয়োজন করছে। এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে দেশের খ্যাতনামা ২১টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বইমেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়— এ দুটো বিষয় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটি বিশ্ববিদ্যালয় তখনই ভাইব্রেন্ট থাকে, যখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বইয়ের মেলা বসে। বিশ্বের সব বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বইমেলার আয়োজন করা হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ আয়োজন করায় বণিক বার্তা ও প্রকাশকদের ধন্যবাদ জানায়।
বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.আতাউর রহমান প্রধান, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামস উল ইসলাম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তফা খায়ের, ঢাবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমান, লংকাবাংলা মার্কেট পালসের সম্পাদক এসএআর মঈনুল ইসলাম, সময় প্রকাশনের প্রকাশক ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।
ছাপার বইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেকটি জিনিসেরই একটি স্বাভাবিক, সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত জীবন, গঠন ও প্রকৃতি রয়েছে। আমরা প্রযুক্তির ওপর এত বেশি নির্ভরশীল হয়ে গেছি যে, এখন চোখের ও মস্তিষ্কের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃতি যেগুলো আমাদের শরীরের গঠনের সঙ্গে তৈরি করেনি, সেগুলোর প্রতি আমাদের এত বেশি ঝোঁক, এত বেশি আকর্ষণ যে এখন আমাদের শরীর হুমকি মুখে। তাই এত দিন ই-বুকে থাকব, কম্পিউটারে লেখাপড়া করব— এসব বিষয়কে উত্সাহ দিলেও তা এখন চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মানুষ আবার সেই ছাপানো বইয়ের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। নন-ফিকশন বইমেলা আয়োজনে সহযোগী সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের সবার একটা প্রশ্ন, ছাপা বই কতদিন চলবে। একটা ভালো খবর হচ্ছে— বিশ্বজুড়ে, এমনকি বাংলাদেশের বাজারেও ছাপা বইয়ের বাজার ক্রমেই বড় হচ্ছে। বিশ্বের সব দেশেই ছাপা বইয়ের বাজার আবার নতুন করে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে। ডিজিটাল বুক বা ই-বুক নিয়ে যে বিরাট উচ্ছ্বাস কয়েক বছর আগে শুরু হয়েছিল, ক্রমান্বয়ে তার বাজার কিছু হলেও কমতির দিকে। আমরা এই যে আয়োজনটা করি তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা চাই ছাপা বই আমাদের মাঝে থাকুক।
মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— অনন্যা, অনুপম প্রকাশনী, অবসর প্রকাশনা সংস্থা, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন, আগামী প্রকাশনী, উত্স প্রকাশনী, কথা প্রকাশ, কাকলী প্রকাশনী, একাডেমিক প্রেস অ্যান্ড পাবলিশার্স লাইব্রেরি, ঐতিহ্য, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড,দিব্য প্রকাশ, নালন্দা প্রকাশনী, প্রথমা প্রকাশন, বাংলা একাডেমি, বেঙ্গল পাবলিকেশনস লিমিটেড, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, শ্রাবণ পাবলিকেশনস, সময় প্রকাশন, সংহতি প্রকাশন ও সাহিত্য প্রকাশ।