চীনে স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ‘কোভিড যুদ্ধ’, চলছে আলোচনা-সমালোচনা

  © বিবিসি

চীনে স্কুলের ইতিহাস বিষয়ক পাঠ্যবইয়ে করোনা মহামারী মোকাবেলা করা নিয়ে প্রথম একটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে; আর তা নিয়েই আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে অনলাইনে। বইয়ে দেশের করোনা মোকাবেলা নিয়ে সংক্ষিপ্ত যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তা সত্য কিনা সে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নেতারা এ বছরের শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘চূড়ান্ত জয়’ ঘোষণা করেছিলেন।করোনাভাইরাসের তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকা নিয়েও চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, বুধবার ভিডিও শেয়ারিং সম্পর্কিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের চীনা সংস্করণ ডাওইনে চীনের স্কুলগুলোর অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যবইয়ের একটি প্যারাগ্রাফের সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিও ক্লিপটি আপলোড করেছেন এক ব্যবহারকারী। তিনি সম্ভবত ইতিহাস শিক্ষক। ভিডিও পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, এটি এরই মধ্যে ইতিহাস বইয়ে লিপিব্ধ হয়েছে।

চীনের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ সম্পর্কিত সরকারি প্রতিষ্ঠান পিপল’স এডুকেশন প্রেস ওই ইতিহাস বইটির একটি কপি প্রকাশ করেছে। সেটি হাতে পেয়েছে বিবিসি। কোভিড যুদ্ধ জয় সংক্রান্ত অধ্যায়টি সম্ভবত ছাপানো হয়েছে ‘সামাজিক জীবনে পরিবর্তন’ সেকশনে।

অধ্যায়টিতে বলা হয়েছে, “কমিউনিস্ট সরকার সবসময়ই জনগণের জীবন, জীবনের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। আমরা মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছি।”

২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর জিরো-কোভিড নীতি নিয়েছিল চীন। দেশজুড়ে দিনের পর দিন লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, প্রতিদিন বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার মতো কঠোর সব নিয়ম চালু করে চীন সরকার।

দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ এমন কঠোর সব নিয়মকানুন জারি থাকায় সীমাহীন ভোগান্তিতে থাকা চীনের জনগণ ২০২২ সালের নভেম্বরের দিকে দেশজুড়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করলে ডিসেম্বরে জিরো-কোভিড নীতির বেশিরভাগ বিধিনিষেধ শিথিল করে চীন সরকার।

স্কুলের পাঠ্যবইয়ের লেখনীতে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীনের নেতাদের বিজয় ঘোষণার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু অনলাইনে যারা বিতর্কে জড়িয়েছেন তাদের অনেকেই প্রশ্ন করছেন— পাঠ্যপুস্তকে পুরো বাস্তব সত্যটা তুলে ধরা হয়েছে কিনা সেটি নিয়ে।

ডাওইনের এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কীভাবে শেষ হল সে বিষয়টির কোনও উল্লেখ কি প্রবন্ধে আছে?

আরেক ব্যবহারকারী লেখেন, কীভাবে আপনারা এসব ছাইপাঁশ লেখার ধৃষ্টতা দেখাতে পারেন? আরেকজন লেখেন, গত তিন বছর আমাদের যে ভয়াবহ যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে, এ প্রবন্ধের প্রতিটি অক্ষর দিয়ে সে যন্ত্রণাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষের মন্তব্যেই মহামারীর দিনগুলোতে কাটানো সময়ের প্রতিচ্ছবিই উঠে এসেছে।


সর্বশেষ সংবাদ