জাবির ভর্তি আবেদনের খুঁটিনাটি

জাবি ক্যাম্পাস
জাবি ক্যাম্পাস  © টিডিসি ফটো

গেল বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষা ১০টি ইউনিটে হলেও এ বছর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৫টি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এছাড়াও এবারের ভর্তি পরীক্ষায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। জেনে নেওয়া যাক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার খুঁটিনাটি বিষয়।

আবেদন শুরু ও শেষ কবে: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি আবেদন বুধবার (১৮ মে) সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে। আগামী ১৬ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত এ ভর্তি আবেদন চলবে।

ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য সময়: আগামী ৩১ জুলাই হতে ১১ আগস্টের মধ্যে প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ ও সময়সূচি পরবর্তীতে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া পরীক্ষার পূর্বে বিস্তারিত তথ্য ও সিটপ্ল্যান juniv-admission.org ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

আবেদন যোগ্যতা: ২০১৮ সাল ও তার পরবর্তী বছরসমূহের মাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষা এবং ২০২০ ও ২০২১ সালের উচ্চমাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এবার জাবিতে প্রথমবর্ষ ভর্তিতে আবেদন করতে পারবে। মাধ্যমিক/সমমান ও উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার ৪র্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ গণনা করা হবে। এছাড়া জি.সি.ই. ২০১৬ সাল থেকে তৎপরবর্তী সাল পর্যন্ত লেভেল পরীক্ষায় অন্তত ৫টি (পাঁচ) বিষয়ে এবং ২০২০ অথবা ২০২১ সালের A লেভেল পরীক্ষায় অন্তত ২টি বিষয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।

আবেদনকারীর লেভেল এবং A লেভেলের মোট ৭টি বিষয়ের মধ্যে ৪টি বিষয়ে কমপক্ষে B গ্রেড ও ৩টি বিষয়ে কমপক্ষে C গ্রেড থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষার্থী যেকোনো ইউনিটে আবেদন করতে পারবে।

বিভাগ ও বিষয়ভিত্তিক আবেদন যোগ্যতা: জাবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষ ভর্তিতে বিভাগ ও বিষয়ভিত্তিক আলাদা আলাদা যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই লিংকে পাওয়া যাবে।

ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ: এসএসসি ও এইচএসসি প্রাপ্ত জিপিএ’র জন্য ২০ নম্বর বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এসএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএর ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৫ এবং এইচএসসি’র ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৫ নম্বর বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

আবেদন ফি: জাবিতে এবার মোট পাঁচটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জাবির এ, বি, সি ও ই ইউনিটে আবেদন ফি ৯০০ টাকা ও ডি ইউনিটে আবেদন ফি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গেলে বছর থেকে বেড়েছে।

ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস: এবারের ভর্তি পরীক্ষা এইচএসসি’র পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস অনুযায়ী হবে। এইচএসসি ২০২১ পরীক্ষার্থীদের জন্য পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসের আলোকে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিভিন্ন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার নম্বর বণ্টন

এ ইউনিট (গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি): বাংলা ৩, ইংরেজি ৩, গণিত ২২, পদার্থবিজ্ঞান ২২, রসায়ন ২২ এবং আইসিটি ৮ নম্বর।

বি ইউনিট (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও আইন অনুষদ): বাংলা ২৫, ইংরেজি ২৫, সাধারণ গণিত ০৫, এবং সাধারণ জ্ঞান, সাম্প্রতিক বিষয় ও আইকিউ ২৫ নম্বর।

সি ইউনিট (কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট): বাংলা ১৫, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় ৫০ নম্বর।

ডি ইউনিট (জীববিজ্ঞান অনুষদ): বাংলা ও ইংরেজি ৮, রসায়ন ২৪, উদ্ভিদবিজ্ঞান ২২, প্রাণিবিদ্যা ২২ এবং বুদ্ধিমত্তা ৪ নম্বর।

ই ইউনিট (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ-জেইউ): বাংলা ১০, ইংরেজি ৩০, গণিত ২৫ এবং সমসাময়িক ব্যবসায়িক বিষয়াবলী ১৫ নম্বর।

প্রয়োজনীয় নির্দেশনা: ওএমআর শিট (উত্তরপত্র)-এর নীচে নির্ধারিত স্থানে নির্দেশনা মোতাবেক একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজি বাক্য লিখতে হবে। ইংরেজি ভার্সন এবং A লেভেল/O লেভেলের আবেদনকারীদের প্রশ্নপত্র ইংরেজিতে হবে এবং তাদের পরীক্ষা ইউনিট কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার জন্য বিশেষ সাহায্য প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধান বরাবর সাদা কাগজে আবেদন করে সম্মতি নিতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রে (OMR শিট) ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর ও অন্যান্য ঘরে ইংরেজি সংখ্যায় লিখতে হবে এবং সে অনুযায়ী বৃত্ত ভরাট করতে হবে।

ভর্তির জন্য নির্বাচন পদ্ধতি

লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে নিম্নের (২)-এ বর্ণিত প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মোট সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিট/বিভাগের আসন সংখ্যার সর্বাধিক ১০ (দশ) গুণ শিক্ষার্থীর পৃথক তালিকা মেধা অনুযায়ী প্রণয়ন করা হবে। সি ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ এবং চারুকলা বিভাগের চূড়ান্ত মেধাক্রম ব্যবহারিক পরীক্ষার পরে প্রকাশ করা হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

গ্রেডিং পদ্ধতিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত জিপিএ-কে ১.৫ দ্বারা এবং উচ্চমাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত জিপিএ-কে ২.৫ দ্বারা গুণ করে ফলাফল তৈরি করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার্থে ০ লেভেল এবং A লেভেল-এর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ গ্রেডের জন্য ৫, ৪ গ্রেডের জন্য বি, সি গ্রেডের জন্য ৩.৫ এবং D গ্রেডের জন্য ৩ পয়েন্ট গণ্য করা হবে। উল্লিখিত গ্রেডিং/পয়েন্ট ব্যতীত অন্য কোনো গ্রেড/পয়েন্ট থাকলে তা সিএসই’র গ্রেডিং সমতা নির্ধারণী কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।