২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:০৩

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে অবৈধ ইলিশ বিক্রি

গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের নোমরস্লুইজে প্রকাশ্যে চলছে ইলিশ বিক্রি  © টিডিসি ফটো

সরকারের জারি করা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পটুয়াখালীর গলাচিপায় বসছে অবৈধভাবে ধরা ইলিশের হাট। মা ইলিশ সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন নদী ও সাগরে মাছ শিকারে কড়াকড়ি থাকলেও প্রতিদিন নিয়ম করে চলছে এই গোপন বেচাকেনা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে উপজেলার অন্তত ১০টি স্থানে দালাল ও নির্ধারিত ক্রেতাদের মাধ্যমে চলছে অবৈধ ইলিশ বিক্রি।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে চরবিশ্বাসের নোমোর স্লুইসগেট এলাকায় তোলা এক ভিডিওতে দেখা যায়, নাদীর তীরে জেলেদের কাছ থেকে দালালের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে সদ্য ধরা ইলিশ। স্থানীয় সূত্র জানায়, এখানে অপরিচিত কারও কাছে মাছ বিক্রি করা হয় না জেলেদের নির্দিষ্ট ব্যাকতিরা সব বেচাকেনা নিয়ন্ত্রণ করে।

জেলে সাইদুল মিয়া বলেন, চরবিশ্বাসের নোমোর স্লুইসগেট এলাকায় প্রতিদিনই ইলিশ ধরা হচ্ছে। নির্ধারিত ব্যাক্তিকে ফোনে অর্ডার দিলে বাড়ি পৌঁছে যায় মাছ।

অভিযোগ আছে, চরবাংলা, চরআগস্তি ও চরকাজল এলাকায় অভিযান চলাকালে অনেক জেলে উল্টো প্রশাসনের ট্রলারকে ধাওয়া দেয়। একদিকে অভিযান চললে অন্যদিকে ইলিশ শিকার করে জেলেরা। যা দিনেরাতে চলে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে। 

অন্যদিকে পানপট্টি লঞ্চঘাট ও বদনাতলী নদীতে দেখা গেছে, জেলেরা প্রশাসনের নজর এড়াতে রাতের আঁধারে জাল ফেলছে। প্রশাসনের ট্রলার দেখা মাত্রই তারা দ্রুত বন বিভাগের সংরক্ষিত বনে লুকিয়ে পড়ে।

পানপট্টির আড়ৎদার রিয়াদ হোসেন দাবি করেন, পানপট্টির বাজারে ৪ তারিখ থেকে কোনো ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞার সময় আড়ত পুরোপুরি বন্ধ। আশপাশের এলাকায় কিছু লোক অবৈধভাবে মাছ ধরতে পারে।

পানপট্টির জেলে ইউসুফ বলেন, এই সময়টা যদি আরও ১৫ দিন পরে নিষেধাজ্ঞা দিত, তাহলে হয়তো সবাই মেনে চলত। এখন অনেকেই গোপনে মাছ ধরছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  চরবিশ্বাস, জিমতলা, নোমোর স্লুইসগেট, চরকারফারমা ও বদনাতলীর মতো এলাকাগুলোতে প্রভাবশালী দালালদের মাধ্যমে ইলিশ বিক্রি হয়। স্থানীয়দের দাবি, এসব দালালের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না, এমনকি সেখানে মোবাইল ফোন নিয়েও প্রবেশ করা যায় না।

গলাচিপা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ৪ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযানে দেড় লাখ মিটার ইলিশ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া তিনটি ট্রলার জব্দ ও সাতজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, অনেক জেলে নিয়ম অমান্য করে নদীতে নামছে। আমরা প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছি, কিন্তু লোকবল ও পরিবহন সংকটের কারণে কিছু জায়গায় অভিযান সীমিত হচ্ছে। 

গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের নোমরস্লুইজে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।