যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রেপ্তার
যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়ন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম ইফতেখার আহম্মেদ রানা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
শুক্রবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স খাল পাড়ের খন্দকার হাউজ নামের ভাড়া বাসা থেকে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বরে পারিবারিকভাবে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দুর্গাপুরের গোমতী হাউজিং এলাকার কামাল হোসেনের মেয়ে আঁখি আক্তারের (ছদ্ম নাম) সঙ্গে বিয়ে হয় ইফতেখার আহম্মেদ রানার। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় পরিবারের ভাড়া বাসায় উঠেন ইফতেখার আহম্মেদ রানা। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা উপহার ও মেয়েকে পাঁচ ভরি স্বর্ণসহ ছয় লাখ টাকার মালামাল প্রদান করেন। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
যৌতুক না পেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয় আঁখির ওপর। পরবর্তীতে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ১৫ লাখ টাকার যৌতুক দাবি করা হয় মেয়ের বাবার কাছে। টাকা না পেয়ে গত বছরের ৩১ জুলাই রেইসকোর্সের ভাড়া বাসায় নির্যাতন চালানো হয় আঁখির আক্তারের ওপর। ১০০ টাকা দামের তিনটি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পেও নেওয়া হয় স্বাক্ষর। পরবর্তীতে পালিয়ে বাবার বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি।
এদিকে, ২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দ্রমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন আঁখি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ নগরীর রেইসকোর্স এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ইফতেখার আহম্মেদ রানাকে গ্রেপ্তার করেন।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল হক বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দ্রমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় আদালতের গ্রেপ্তাতারি পরোনায় সহকারী অধ্যাপক ইফতেখার আহম্মেদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।