পদ ধরে রাখতে শেকৃবি ছাত্রদল নেতাদের পুনরায় ভর্তির আবেদন
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শাখা ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতারা সংগঠনের পদ হারার ভয়ে নিজেকে আবার ছাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা শুরু করেছেন। তিন বছর পূর্বে মেয়াদ শেষ হওয়া কমিটির কেউই বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বৈধ’ ছাত্র-ছাত্রী নয়। ১৫ মে প্রকাশিত ‘জুলাই–ডিসেম্বর ২০২৫’ সেশন ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায় সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ উভয়ে স্নাতকোত্তরে পুনরায় ভর্তি আবেদন করেছেন। সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে পিএইচডি কোর্সের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে, যারা ইতোমধ্যেই স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিগ্রি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তারা পুনরায় ভর্তি হতে পারবেন না। তবে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে পারবেন।একইভাবে, পিএইচডি ভর্তিতে রয়েছে নির্দিষ্ট দক্ষতার শর্তাবলী—গভীর গবেষণা অভিজ্ঞতা, চাকরির পটভূমি, সুব্যক্ত মান, এবং আন্তর্জাতিক মানের জার্নাল প্রকাশ।তবে এসব নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ছাত্রদলের তিন নেতা উচ্চশিক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নিশ্চিত করতে তোড়জোড় শুরু করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস ২০১০-১১ সেশনে ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষ করেন এবং পরবর্তীতে বোটানি বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন, তবে ডিগ্রি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন। সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবির ২০১১-১২ সেশনে ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষ করেন এবং সীড টেকনোলজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ ২০১৩-১৪ সেশনে ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষ করেন এবং পরে হর্টিকালচার বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। তবে এসব নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ছাত্রদলের তিন নেতা উচ্চশিক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নিশ্চিত করতে তোড়জোড় শুরু করেছেন।
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস ২০১০-১১ সেশনে ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষ করেন এবং পরবর্তীতে বোটানি বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন, তবে ডিগ্রি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন। সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবির ২০১১-১২ সেশনে ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষ করেন এবং সীড টেকনোলজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ ২০১৩-১৪ সেশনে ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষ করেন এবং পরে হর্টিকালচার বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ মে প্রকাশিত জুলাই-ডিসেম্বর/২০২৫ সেশনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয়। এতে সভাপতি তাপস ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সামাদ স্নাতকোত্তরে আবারও ভর্তির আবেদন করেছেন। সাধারণ সম্পাদক আলমগীর আবেদন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে পিএইচডির জন্য।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস বলেন, 'আমি পূর্বে বোটানি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম, কিন্তু তখন আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসাটাই ছিলো আমার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারিনি। বর্তমানে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আবার আবেদন করেছি,যা আবেদনপত্রে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছি।
সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবির বলেন, 'আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই আবেদন করেছি।'
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, আমি ইন সার্ভিসে আবেদন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের কথা জানতাম না। এখন প্রশাসন বাছাই করবে, বাদ দিবে কিনা প্রশাসনের বিষয়। কোথায় জব করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা বলতে চাচ্ছি না।
জুলাই আন্দোলনে শেকৃবির প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তৌহিদ আহমেদ আশিক এ সম্পর্কে বলেন, আমরা আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুপ্রতিষ্ঠিত নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং কোনো অবস্থাতেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাবে না। কারণ গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিয়মের কোনো রকম লঙ্ঘন কিংবা পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ সালাহউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'প্রতি বারই ভর্তির বিষয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সুপারিশ আসে। তবে নীতিমালার বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক মান ও নিয়ম-নীতি রক্ষা করাই আমাদের অগ্রাধিকার। এর মধ্যে থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।'