০৬ মে ২০২৫, ১৬:৫১

৬ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ বাকৃবির শিক্ষার্থীদের

৬ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ  © টিডিসি ফটো

ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক দাবির প্রতিবাদে কৃষিবিদদের প্রতি বৈষম্য নিরসন এবং ছয় দফা দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার (৬ মে) দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে সকাল ১০টার একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড় এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ফাতেমানগর ও ঢাকাগামী হাওর এক্সপ্রেস ময়মনসিংহ স্টেশনে আটকে ছিল।

পরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্সের হস্তক্ষেপে প্রায় দুই ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করে রাখার পর বেলা সাড়ে ১২টায় আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এরপর দুপুর সোয়া দুইটায় বাকৃবি উপাচার্য এবং বিকেল চারটায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপিটি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।

কৃষি অনুষদের  শিক্ষার্থী ইফরান ইউসুফ শিহাব বলেন, ‘মেধা দিয়ে গড়ি দেশ, মেধাই হক আমার অহংকার। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হলে আপনাদের অনেকগুলো ফ্লো মেইনটেইন করে আসতে হয়, এসএসসি, এইচএসসি, তারপর ভর্তি যুদ্ধ। তারপর চান্স পেলে, টপ করলে আপনি কৃষির মত একটি সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে পারবেন। পরিসংখ্যান মতে, একটি আসনের জন্য ২০২৩-২৪ সেশনে ২৪ জন ভর্তিচ্ছু লড়াই করে। তাহলে আপনারা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা কীভাবে অযৌক্তিক দাবি নিয়ে কৃষি সেক্টরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন তা আমার বুঝে আসে না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের যৌক্তিক দাবিতে ভার্সিটি এবং জেলা প্রশাসন আমরা একমত। দাবি আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। যারা এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত না, নিম্ন আয়ের মানুষ আছেন জরুরি কাজে ঢাকা যাবেন তাদের জন্য যেন জনদুর্ভোগ না হয় সেটাও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

আরো পড়ুন: অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ বাড়ছে নিটার শিক্ষার্থীদের

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কাছে আমার অনুরোধ যেন মেসেজটা আজকে পৌঁছে যায়। ইউনিভার্সিটিতে পড়া গ্র্যাজুয়েট এবং ডিপ্লোমাধারী দের তুলনা সেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য না। কোন রকম অস্থিতিশীল পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

ছয় দফা দাবিগুলো হল-
*কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ (বিএডিসি) অন্যান্য সব গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ১০ম গ্রেড (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/ উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

*ডিএই ও অন্যান্য কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ৯ম ও অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত রি-ভিজিট ও পদবৃদ্ধি করতে হবে।

*নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ব্যতীত ৯ম গ্রেডে (বিএডিসির কোটা বাতিল) পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না। এক্ষেত্রে ১০ম গ্রেডের পোস্টসমূহ গেজেটের আওতার বাইরে স্বতন্ত্র পদসোপান/ প্রচলিত কাঠামো রাখতে হবে।

*কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

*কৃষি/কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ক স্নাতক ব্যতীত নামের সাথে "কৃষিবিদ" পদবি ব্যবহার করা যাবে না। এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

*কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের (ডিএই) অধীনেই রাখতে হবে।