নিজ ক্যাম্পাসের শিক্ষককে ভিসি হিসেবে পেতে উত্তাল সিভাসু
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) শিক্ষকদের মধ্যে থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (০৬ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সিভাসুর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের এই শাটডাউন নিয়ে আলোচনা হয়। শিক্ষকরাও মনে করছেন শিক্ষার্থীদের দাবিটি যৌক্তিক। একজন উপাচার্যের দায়িত্বই হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যার সমাধান এবং উন্নতি নিয়ে কাজ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে চেনেন, জানেন এমন একজন শিক্ষকই এই কাজগুলো ভালো করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্ন ডাক্তার বোরহান উদ্দীন বলেন, তিন দশকের পদার্পণ করতে যাওয়া অভিজ্ঞ একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বারবার বাইরে থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি আমাদের দাবির পরও পুনরায় বাইরে থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। আমাদের দাবি উপাচার্য আমাদের শিক্ষকদের ভেতর থেকেই দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সিভাসুতে সর্বাত্মক ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি, প্রশাসনের জরুরি সভা
ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের স্নাতকের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের দাবিটা খুবই স্পষ্ট। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অভিজ্ঞ অধ্যাপক রয়েছেন। কিছুদিন আগেও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন আমাদেরই প্রাক্তন শিক্ষক। আমাদের শিক্ষকগণ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হচ্ছেন কিন্তু একটা কুচক্রী মহল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের দায়িত্ব নিতে বাঁধা সৃষ্টি করছেন। প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর আমরা যে স্মারক লিপি প্রেরণ করেছি তা কোন একটা শক্তির বলে সে দপ্তরগুলোতে পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না। পরিষ্কার ভাবে সিভাসুর অগ্রযাত্রা নিয়ে এখানে একটা চক্রান্ত করা হচ্ছে।
সিভাসু’র চলমান কর্মসূচীর ব্যানার
সাবেক উপাচার্যদের কথা উল্লেখ শাহরিয়ার বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি ছিল। যখনই বাইরে থেকে শিক্ষকরা এসে দায়িত্ব নিয়েছেন, এই চুক্তিগুলো বাতিল করে আমাদের শিক্ষার্থীদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। বাংলাদেশের বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসের আয়তন মাত্র সাত একর। আমাদের বিভিন্ন অনুষদের জন্য আরও জায়গা প্রয়োজন। এই বহিরাগতরা যখনই ছিল ক্ষমতায়, তখনই এই অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রতিটি সিভি দেখে দেখেই ৪০ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ: শিক্ষা উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষকরা অনেক বৈরী পরিবেশেও আমাদের উন্নতির জন্য কাজ করে গেছেন। আমাদের সকল বিষয় নিয়েই তারা অন্য যে কারোর চেয়ে বেশি অবগত। আমাদের অগ্রগতির জন্য উপাচার্য হিসেবে আমাদের শিক্ষককেই নিয়োগ দেওয়ার দাবি নিয়ে আমরা শীঘ্রই শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন এ এস এম লুৎফুল আহসান। এরপর থেকেই নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বাত্মক অবরোধের এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।