‘ঘ’ ইউনিটে উত্তীর্ণদের আবার পরীক্ষা নেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা পুনরায় নেয়া হবে। তবে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন; শুধু তারাই এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির মিটিং এই সিদ্ধান্ত হয়। ঢাবির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মাকসুদ কামাল বলেন, পরীক্ষা নিয়ে সৃষ্ট সন্দেহ দূর করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সম্মান রক্ষায় এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি ছিল বলে তিনি মনে করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ডিন’স কমিটির সভায় উত্তীর্ণদের নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটাই কার্যকর। পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শীঘ্রই নতুন পরীক্ষার এই তারিখ ঘোষণা করা হবে তিনি জানান। মিটিং সূত্রের তথ্য, পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণের জন্য সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইমদাদুল হক, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু দেলোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, এ বছর ইউনিটটিতে মোট ৯৫ হাজার ৩৪১ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেন। এতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৪৬৩ জন। কিন্তু গত ১২ অক্টোবর ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এরপর পরীক্ষাটি বাতিল চেয়ে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে আইন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আখতার হোসেন পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অনশন শুরু করেন। পরে তাতে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ অংশ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। আর যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে আবার পরীক্ষা নেওয়ার দাবিসহ চার দফা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। শুধু তাই নয়, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশেষ ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়ে মৌন পদযাত্রা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মত কর্মসূচিও গ্রহণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। মূলত এসব আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই আজ এই সিদ্ধান্ত আসে।
প্রসঙ্গত, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ভর্তি পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁস হয়েছিল বলে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর অধিকতর তদন্তের স্বার্থে নতুন করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।