শেকৃবির ছাত্রী হলের ওয়াশরুমে পানি নেই, খালি ফিল্টারও
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ সায়েরা খাতুন হলের ছাত্রীরা তীব্র পানিসংকটে ভুগছেন। ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ছাত্রীরা হলে এসে পানি পাচ্ছেন না। ওয়াশরুমে ও ফিল্টারে খাওয়ার পানি না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ছাত্রীদের। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই নতুন পাম্পের সাথে হলের পানির সংযোগ স্থাপন করে দেবেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে ১০ তলা বিশিষ্ট শেখ সায়েরা খাতুন ছাত্রী হলের নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০২৩ সালে চালু করা হয়। চালুর পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে হলে পানি সংকটের ঘটনা ঘটলেও স্থায়ী কোনো সমাধান করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রিজার্ভার নষ্ট থাকার কারণে হলটিতে দুপুরে বেশিরভাগ সময়ে ওয়াশরুমে পানি থাকে না, কখনো খাবার পানি থাকে না। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা হলে এসে ওয়াশরুমে যেতে পারেন না, গোসল করতে পারেন না। মাঝেমধ্যে ওয়াশা থেকে পানি সাপ্লাই দেওয়া হয় তবে তা পর্যাপ্ত না।
হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, হলে ওয়াশরুমে পানি নেই, কোনো ফিল্টারে পানি নেই। হঠাৎ একটু পানি আসলেও তাতে ময়লা থাকে, পানির রং থাকে কালচে। সেই পানি দিয়ে হাত মুখ ধোয়াও সম্ভব না, শরীর চুলকায়। এভাবে হলে থাকতে কষ্ট হচ্ছে খুব। পরীক্ষা থাকার কারণে হলে আসতে হয়েছে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার সাথে সাথেই। হল প্রশাসন আমাদের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিলে এরকম পানি সমস্যায় ভুগতে হতো না।
হলটির আরেক শিক্ষার্থী বলেন, গোসলের সময় পানি না পেয়ে অন্য হলে গিয়ে গোসল করেছি। পানি আবাসিক হলের মৌলিক প্রয়োজনগুলোর একটি অথচ আমরা দীর্ঘদিন পানি না থাকার সমস্যায় ভুগছি। আমরা মেয়েরা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করছি এখানে। প্রভোস্ট স্যারকে বারবার বলেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অতি দ্রুত পানি সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়টির আবাসিক হলগুলোতে বিভিন্ন সময়ে পানি সংকটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যে গ্যাসের সংকটেও পড়েন শিক্ষার্থীরা। হল কর্মচারীদের কাজে গাফিলতির কারণে এমন পরিস্থিতি বলে মনে করেন অনেক শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, প্রশাসন এসব সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে উদাসীন। তারা এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এছাড়া খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।
শেখ সায়েরা খাতুন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের যেন অসুবিধা না হয়। পাম্পে সমস্যার জন্য এমন হয়েছে। চলতি মাসের ২৮ জুন নাগাদ সমস্যা সমাধান হবে বলে প্রকৌশল বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। বর্তমানে আমরা ওয়াসা থেকে পানি নিয়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছি। নিজস্ব পাম্প ঠিক হলে সমস্যা থাকবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. মোমেনুল আহসান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের পানির সমস্যা হতে দেব না। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই নতুন পাম্পের সাথে হলের পানির সংযোগ স্থাপন করে দেব। আর এই কয়দিন ওয়াসা থেকে পানি এনে সার্বক্ষণিক রিজার্ভ ট্যাংক পরিপূর্ণ রাখার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করি।