খামারে চাষ করা মাছের ভাইরাসে ১০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্ভাবনা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) মাছের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভ্যাকসিন প্রদান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বক্তারা বলেন, স্টিঙ্গিং ক্যাটফিশ, ক্ল্যারিয়াস (মাগুর), কই এবং পাঙ্গাসকে রোগ-প্রতিরোধী মাছ হিসাবে বিবেচনা করা হত। কিন্তু বর্তমানে এর পরিবর্তন হচ্ছে। বাংলাদেশে খামারে চাষকৃত মাছের মধ্যে ১১% পাঙ্গাস, ৮% কার্পমাছ, ৯% তেলাপিয়া, ১০% ভিয়েতনামি কৈ, ২৬ % গুলসা ও ৩৬% শিং মাছের ফার্ম ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমিত। যার ফলে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিএফআরআইয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে বিএফআরআই ও ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ার (ইউপিএম) যৌথ ব্যবস্থাপনায় কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. মো. জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ার গবেষক অধ্যাপক ড. জামরী সাদ ও সহকারী অধ্যাপক ড ইনা সালওয়ানী মোহাম্মদ ইয়াসিন এবং বিএফআরআইয়ের চীফ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.অনুরাধা ভদ্র ও সিনিয়ির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সিরাজুম মনির।
কর্মশালার শুরুতে বিএফআরআইয়ের কাজ, গবেষণা ও লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে উপস্থাপনা প্রদান করা হয়। এরপর মাছের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভ্যাকসিন প্রদানের গুরুত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিএফআরআইয়ের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সিরাজুম মনির।
পরবর্তীতে মালয়েশিয়াতে জলজ প্রাণীর স্বাস্থ্য ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভ্যাকসিন উৎপাদন, গবেষণা ও চিকিৎসা বিষয়ক উপস্থাপনা প্রদান করে ইউপিএমের জলজ প্রাণী স্বাস্থ্য এবং থেরাপিউটিকস ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট অফ বায়োসায়েন্সের গবেষক অধ্যাপক ড. জামরী সাদ ও সহকারী অধ্যাপক ড ইনা সালওয়ানী মোহাম্মদ ইয়াসিন।
প্রবন্ধ উপস্থাপনায় গবেষকেরা বলেন, এসব ক্ষতি কমানের জন্য এন্টিবায়োটিক, প্রোবায়েটিক ও বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যাবহার করা হলেও তা অকার্যকর। এছাড়াও এন্টিবায়োটিক, প্রোবায়েটিক ও বিভিন্ন রাসায়নিক পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। তাই এই বিশাল ক্ষতি মোকাবেলায় বিএফআরআই খামারে চাষের ভিয়েতনামী কৈ এর জন্য কৈ ভ্যাক নামে একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন।
কর্মশালায় বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. মো. জুলফিকার আলীর বলেন, বাংলাদেশে বিএফআরআইই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা মাছের উৎপাদন, উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ নিয়ে একক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ার গবেষকদের সাথে যদি আমাদের গবেষকরা একসাথে পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারি । তবে উভয় দেশের মাছের রোগ নির্ণয়, রোগ প্রতিরোধ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।