০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:৩২

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে থিসিস জালিয়াতি

  © ফাইল ফটো

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বেগ, এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের দুই সহকারী অধ্যাপক ড. রূপালী আক্তার, মো. আবতাবুজ্জামান ও একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আবদুল ওয়াদুদ সরকারের বিরুদ্ধে থিসিস জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগকারীরা হলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পূর্বা ইসলাম এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে সরকারী চাকরিরত মো. সেলিম জাহান। 

তারা জানান, তাদের অনুমতি ব্যাতিত তাদের গবেষণাকৃত একটি থিসিস পেপার গোপন জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেদের নামে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জার্নালে প্রকাশ করেছে কতিপয় ব্যক্তি। 

গত বুধবার থিসিসের দুই স্বত্বাধিকারীর পক্ষ থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) থিসিস চুরির বিষয়টি লিখিত ভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

তাদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, আর্সেনিক একিউমুলেশন অব এ্যানিমেল ফিড (গ্রাস এ্যান্ড ওয়াটার হায়সিনথ) ইন ফরিদপুর সদর উপজেলা (জে.শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় . ৮(২), ৩১-৩৮ জুলাই ২০১৪) প্রবন্ধটি অবৈধ এবং অনৈতিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রবন্ধে উল্লেখিত গবেষণা কাজ আমি (পূর্বা ইসলাম,সহকারী অধ্যাপক,ফ র্মাকোলজি বিভাগ, ভেটেরিনারি অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ) এবং তৎকালীন এমএস ছাত্র মো. সেলিম জাহান (ভেটেরিনারি সার্জন, সাটুরিয়া, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর, মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ) এর যৌথ গবেষণা কাজ।

তারা জানান, এই প্রবন্ধটি আমাদের প্রস্তুতকৃত বা প্রেরিত নয়। এমনকি আমরা এ ব্যাপারে অবগতও নই কিংবা প্রকাশের অনুমতিও প্রদান করিনি। প্রথম লেখক মো. সেলিম জাহান ব্যতীত বাকি লেখকবৃন্দের এই গবেষণা কাজে কোন প্রকার সম্পৃক্ততাও নেই। এমতাবস্থায় এই প্রবন্ধটি অতি শিগগিরই জার্নালটি থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারসহ মেধাস্বত্ত্ব লঙ্ঘনের অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে বাধিত করবেন। বাংলাদেশের সচেতন সুনাগরিক হিসেবে আমরা আপনাদের কাছে সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশী।

পূর্বা ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গবেষণাটি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জার্নালে প্রকাশের পর আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানোর পর তারা লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেন। বুধবার আমরা লিখিতভাবে সকল তথ্য প্রমাণসহ অভিযোগটি দায়ের করি। কারো কারো পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে জার্নাল থেকে লেখা প্রত্যাহার ও আপোসের কথা বলা হলেও আমি বলেছি এটা আইনত গুরুতর অপরাধ।

গবেষণার আরেক স্বত্বাধিকারী সেলিম জাহান বলেন, আমি ওই জার্নালে প্রকাশের বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার থিসিস যে প্রকাশ করা হবে বা করা হয়েছে কিছুই তারা আমায় জানাননি। পরে জানতে পেরে অভিযোগ দিয়েছি।

অন্যদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ট্রেজারার মো. আনোয়ারুল হক বেগ বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।  তিনি জানান, ওই তিনজন বলেছিলেন যে, ‘স্যার আপনার নাম দিয়ে দেই’।  

এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা ট্রেজারারের।  অন্য শিক্ষকদের একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও ড. রূপালী আক্তার এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চান নি।

এদিকে শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি জেনেছেন। লিখিত অভিযোগ নিয়ে দ্রুত তদন্ত করে দেখা হবে এবং অবশ্যই সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হবে।