মিষ্টি আলু নিয়ে বাকৃবি অধ্যাপকের গবেষণা, ফলন আসবে তিন মাসে
বর্তমানে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে, আর বাড়ছে জনসংখ্যা। এমতাবস্থায় দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) জেনেটিক্স এন্ড প্লান্ট ব্লিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিন।
দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চফলনশীল মিষ্টি আলু নিয়ে অধ্যাপক আরিফ হাসান কাজ করছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন তার স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি শিক্ষার্থীরা। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে অধ্যাপক রবিনের এ গবেষণার মাঠ।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় এক বিঘা জমিতে মিষ্টি আলু নিয়ে গবেষণা চলছে। জমির ছোট ছোট খণ্ডে বিশাল জায়গাজুড়ে মিষ্টি আলু লাগানো হয়েছে। গবেষক জানান, নতুন ৩-৪টি উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি আলুর জাত ছাড়করণের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এ আলু স্বল্প সময়ের জাত হওয়ায় কৃষকরা তা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হতে পারবেন।
মিষ্টি আলুর গবেষণা নিয়ে অধ্যাপক রবিন জানান, মিষ্টি আলুর ৫৪০টি জেনোটাইপ আমরা এখানে যাছাই-বাছাই করেছি। পরে বেশ কয়েক রাউন্ড নির্বাচন শেষে এখন ২৩টি জেনোটাইপ নিয়ে কাজ করছি। এখানে আমাদের যে জেনোটাইপগুলো আছে, সেগুলোর সবকয়টিই উচ্চ ফলনশীল।
তিনি বলেন, একটি গাছে এক কেজির বেশি ফলন হয়। এগুলো আবার স্বল্প সময়ের (৯০ দিন) জাত। তিন মাসের মধ্যে ফসল তোলা যাবে। এ আলু চাষাবাদে কৃষকের ভাগ্য বদলানো সম্ভব।
অধ্যাপক রবিন বলেন, আমরা যে গবেষণাটি করছি, সেটির শিরোনাম হলো ‘রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফ বায়োফর্টিফাইড সুইট পটেটো ফর বাংলাদেশ এন্ড সাউথ এশিয়া’। এ প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টার (সিআইপি)। সেখান থেকে পাওয়া বীজগুলো আমরা গবেষণাগারে অঙ্কুরিত করেছি। পরে সেগুলোকে মাঠে নিয়ে এসেছি।
মিষ্টি আলু নিয়ে গবেষণারত পিএইচডি শিক্ষার্থী ফাবিহা হক বলেন, আমাদের গবেষণাতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি স্বল্প সময় এবং উচ্চ ফলনের দিকে। এতে কম সময়ে কৃষকরা বেশি উৎপাদন করতে পারবেন। পাশাপাশি অন্য একটি ফসলও চাষ করতে পারবেন। এতে করে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি পাবে। মিষ্টি আলু চাষে খরচ কম হওয়ায় কৃষকদেরও বেশ আগ্রহ আছে।