শেকৃবিতে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ২
পূর্ব শত্রুতা এবং শ্রেণিকক্ষে উত্ত্যক্ত করার জেরে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা আঞ্চলিক গ্রুপ ও উত্তরাঞ্চল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাতে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা আঞ্চলিক গ্রুপের এএসভিএম অনুষদের ইয়াসির আরাফাত (১৯ ব্যাচ) এবং মোজাম্মেল মৃধা নোবেল (১৯ ব্যাচ) আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা হল সংলগ্ন এলাকায় এএসভিএম অনুষদের ৭৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত ও ৭৬তম ব্যাচের রবিউল ইসলামের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় রবিউল ইসলাম মারধরের শিকার হন। এরপর রবিউল তার বন্ধু, বড় ও ছোট ভাইদের নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করলে আরাফাত আহত হন।
এক পর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা হল প্রশাসনের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসলে বাইরে আবারও সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় ঢাকা আঞ্চলিক গ্রুপের মোজাম্মেল মৃধা নোবেল নামের এক শিক্ষার্থী মাথায় গুরুতর আঘাত পান।
এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ৭৭ ব্যাচের তোফায়েল আহমেদ ও ৭৮ ব্যাচের ইয়াসির আমাকে দেখে সবসময়ই উপহাস করেন। গত ছয় মাস ধরে এভাবে বিরক্ত করছেন তারা। কারণ অনেক আগে আমি এবং তোফায়েল মাদকাসক্ত ছিলাম। এখন আমি সম্পূর্ণরূপে মাদক থেকে দূরে আছি। কিন্তু তিনি (তোফায়েল) এখনো মাঝেমধ্যে মাদক গ্রহণ করে ক্লাসে আসেন। বরাবরই তিনি আমাকে উত্ত্যক্ত করেন। এ বিষয়টি ডিন ম্যাডামসহ বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ মেসেজের মাধ্যমে আমি গালি দিলে আরাফাত আমাকে মারধর করেন। পরে আমিও ওকে (আরাফাতকে) মারধর করি।
ইয়াসির আরাফাত বলেন, রবিউল ১৭ ব্যাচের হলেও আমাদের সঙ্গে ক্লাস করেন। কিন্তু আমার সঙ্গে গত এক বছর কোনো কথা হয় না। তিনি তার মতো ক্লাস করেন, আমি আমার মতো। কিন্তু আকস্মিক মঙ্গলবার দুপুরে আমাকে ফোন দেন। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় ফোনে বাজে ভাষায় মেসেজ করেন। পরে ক্যাম্পাসের চাতালে আমার সঙ্গে দেখা হলে কথা হয়। তার জীবন ধ্বংসের জন্য আমি দায়ী এমন কথা বলেন। পরে ৬০-৭০ জন ছেলে মিলে আমাকে ধাওয়া দেন এবং মারধর করেন। এই ঘটনার কারণ আমি জানি না। তবে আমার সঙ্গে যখন কথা বলছিলেন তখন মনে হয়েছে তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন।
ঢাকা অঞ্চলের আহত নোবেল বলেন, ক্যাম্পাসে উত্তরাঞ্চল-ঢাকা অঞ্চলের বিষয়ে জানতাম না। বাইরে থেকে এসে নবাব হলের পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম। পেছন থেকে হঠাৎ কেউ পিঠে বাড়ি দেন। পেছনে ঘুরে দেখি কৃষি অনুষদের আহসান (১৯ ব্যাচ) মারছেন।
এব্যাপারে আহসান কবিরের কাছে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও আমি কাওকে মারিনি। আজ যে সংঘর্ষ হয়েছে তা ঢাকা ও উত্তর দুই আঞ্চলিক গ্রুপের। এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আহত দুজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আজ বুধবার দুই পক্ষের স্টেটমেন্ট নিয়ে পরবর্তীতে তদন্ত অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’